ভারতের অন্যতম প্রধান এয়ারলাইন কো ম্পা নি এয়ার ইন্ডিয়া (Air India) সম্প্রতি তাদের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ভাড়ায় বড় ধরনের কাটছাঁট করেছে। টিকিটের দাম এতটাই সস্তা হয়েছে যে কিছু রুটে ভাড়া লো-কস্ট এয়ারলাইনস (Low-Cost Airlines) থেকেও কমে গেছে।

এত কিছুর পরেও যাত্রীদের মধ্যে বুকিংয়ের প্রতি তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না, যা এয়ারলাইন কো ম্পা নির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাহলে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট টিকিটের বিক্রি এমনভাবে কেন ‘ক্র্যাশ’ করলো? আসুন জেনে নিই।

কোথায় কোথায় ভাড়া সস্তা হয়েছে?
এয়ার ইন্ডিয়া দিল্লি-মুম্বাই, দিল্লি-বেঙ্গালুরু, দিল্লি-দুবাই এবং মুম্বাই-দুবাইয়ের মতো প্রধান রুটে ভাড়ায় ব্যাপক ছাড় দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, দিল্লি-মুম্বাই রুটে এয়ার ইন্ডিয়ার টিকিট এখন ৫,০০০ টাকারও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে, যা আগে ৬,০০০ থেকে ৭,৫০০ টাকার মধ্যে ছিল। একইভাবে, দিল্লি-দুবাইয়ের মতো আন্তর্জাতিক রুটেও ভাড়ায় ১৫-২০% হ্রাস দেখা গেছে।

ফ্লাইটগুলো খালি যাচ্ছে কেন?
কম ভাড়ার পরেও বুকিংয়ের গতি আশানুরূপ ধীর। এয়ার ইন্ডিয়ার কিছু ফ্লাইট ৬০% এরও কম আসন পূর্ণ করে উড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনের সবচেয়ে বড় কারণ হলো সম্প্রতি আহমেদাবাদে (Ahmedabad) ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনা। যেখানে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ (Boeing 787) বিমানটি ল্যান্ডিংয়ের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ক্র্যাশ করে। এই দুর্ঘটনায় ২৬৭ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ফ্লাইটে প্রযুক্তিগত সমস্যা, নিম্নমানের রক্ষণাবেক্ষণ এবং সাম্প্রতিক দুর্ঘটনাগুলো এয়ারলাইনের ভাবমূর্তির উপর প্রভাব ফেলছে। এই কারণেই যাত্রীরা এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন। যদিও কো ম্পা নি এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনার শিকার বিমান AI171-এ কোনো ধরনের প্রযুক্তিগত সমস্যার কথা অস্বীকার করেছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার উদ্দেশ্য কী?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, টাটা গ্রুপের (Tata Group) মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া এখন একটি আগ্রাসী মূল্য নির্ধারণের কৌশল (Aggressive Pricing Strategy) গ্রহণ করছে। এর উদ্দেশ্য হলো তাদের হারানো বাজার অংশীদারিত্ব (Market Share) পুনরুদ্ধার করা এবং যাত্রীদের মধ্যে পুনরায় আস্থা তৈরি করা। এয়ারলাইনের লক্ষ্য হলো কম ভাড়ার মাধ্যমে ফ্লাইটের আসন পূর্ণ করা এবং ব্র্যান্ডকে আবার প্রতিষ্ঠিত করা।