ইজরায়েলের আক্রমণ ব্যর্থ, ইরান বাঁচাল বিদেশমন্ত্রী আরাকচির প্রাণ

ইজরায়েলের আক্রমণ ব্যর্থ, ইরান বাঁচাল বিদেশমন্ত্রী আরাকচির প্রাণ

ইরান আরও একবার ইজরায়েলের (Israel) চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছে। এবার ইজরায়েলের নিশানা ছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি (Abbas Araqchi), যাকে দেশের সবচেয়ে শান্ত ও কূটনৈতিক নেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। ইরানি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে, ইজরায়েল-সমর্থিত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকচিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল।

কিন্তু সময় থাকতে ইরান তা ব্যর্থ করে দেয়। এই চক্রান্তের বিষয়টি তখন ফাঁস হয়, যখন আরাকচি ফ্রান্স, জার্মানি এবং ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রীদের (Foreign Ministers) সঙ্গে জেনেভাতে (Geneva) একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিতে রওনা হচ্ছিলেন।

ষড়যন্ত্রের বিস্তারিত
ইরানি বিদেশমন্ত্রকের উপদেষ্টা হোসেইন রঞ্জবরান (Hossein Ranjevaran) জানিয়েছেন যে, কয়েকদিন আগে এই চক্রান্তের কথা জানতে পারা যায়। তিনি বলেন, ‘ইজরায়েল আমাদের বিদেশমন্ত্রীকে নিশানা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো (Intelligence Agencies) তাদের পরিকল্পনা বানচাল করে দিয়েছে।’ এই ঘটনার পরেও আরাকচি সাহস দেখিয়েছেন এবং তার জেনেভা যাত্রা বাতিল করেননি। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (European Union) উচ্চ প্রতিনিধি কাজা ক্যালাস এবং অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি (Nuclear Deal) নিয়ে আলোচনার জন্য রওনা হয়েছেন।

ইজরায়েলের হামলার ধারাবাহিকতা জারি
গত শুক্রবার ইজরায়েল ইরানের (Iran) উপর এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় হামলা চালায়। এই হামলায় বেশ কয়েকজন প্রধান ইরানি সামরিক কর্মকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। এদের মধ্যে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি (Mohammad Bagheri), আইআরজিসি কমান্ডার জেনারেল হোসেইন সালামি (Hossein Salami), পরমাণু বিজ্ঞানী ফেরেদুন আব্বাসি (Fereydoon Abbasi) এবং মেহদি তেহরানচি (Mehdi Tehranchi) এর মতো বড় নাম অন্তর্ভুক্ত। এই হত্যাকাণ্ডগুলো ইরানকে গভীর আঘাত দিয়েছে এবং এই অঞ্চলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এই হামলায় ইজরায়েলের ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরাকচিকেও শেষ করার চক্রান্ত ছিল।

ইজরায়েলের উদ্দেশ্য কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইজরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি (Nuclear Program) এবং সামরিক শক্তিকে দুর্বল করার জন্য ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে। আরাকচির মতো শান্ত স্বভাবের নেতাকে নিশানা করে ইজরায়েল কেবল ইরানের কূটনীতিকে দুর্বল করতে চায় না, বরং আঞ্চলিক স্তরে অস্থিরতাও তৈরি করতে চায়। কিছু গুজব এও রয়েছে যে, ইজরায়েলের পরবর্তী নিশানা ইরানের সুপ্রিম লিডার খামেনেই (Khamenei) হতে পারেন, যদিও এর কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ হয়নি।

ইরান কড়া জবাব দিল
ইরান ইজরায়েলের এই হামলা ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইজরায়েল-সমর্থিত বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ধরেছে। একই সাথে ইরান আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইজরায়েলের সমালোচনা তীব্র করেছে। আরাকচি জেনেভায় অনুষ্ঠিতব্য আলোচনাকে ‘শান্তি ও কূটনীতির জন্য একটি সুযোগ’ বলে বর্ণনা করেছেন। এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে (Middle East) ইতিমধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *