প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পকে থামাল রাজকীয় সুড়ঙ্গ, বন্ধ হল কাজ, একাধিক ভবন ধসের আশঙ্কা বাড়ল

প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পকে থামাল রাজকীয় সুড়ঙ্গ, বন্ধ হল কাজ, একাধিক ভবন ধসের আশঙ্কা বাড়ল

বারাণসীতে (Varanasi) তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম শহুরে রোপওয়ে (Urban Ropeway) প্রকল্প। গোদোলিয়া চত্বরে পিলারের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় পাইলিং মেশিন মাটির নিচে একটি মুঘল আমলের রাজকীয় সুড়ঙ্গের (Mughal-era Royal Tunnel) সঙ্গে ধাক্কা খেলে কাজ হঠাৎ বন্ধ করে দিতে হয়।

প্রকল্পের ব্লুপ্রিন্টে (Blueprint) এই সুড়ঙ্গটি নথিভুক্ত ছিল না।

মাটি থেকে ২৫ ফুট নিচে ‘সুড়ঙ্গ’ আবিষ্কৃত
মাটি থেকে প্রায় ২৫ ফুট নিচে অবস্থিত এই সুড়ঙ্গটিকে বর্তমানে ‘শাহী নালা’ (Shahi Nala) বলা হয়, যার মধ্যে বর্তমানে নিকাশী বর্জ্য প্রবাহিত হয়। মেশিন দ্বারা ভুলবশত সুড়ঙ্গ অর্থাৎ শাহী নালার দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হতেই নিকাশী জল উপরে উঠতে শুরু করে এবং আশেপাশের ভবনগুলির জন্য বিপদ বেড়ে যায়। এই সুড়ঙ্গ সম্পর্কে NHAI এর নির্মাণ সংস্থাও জানত না, কারণ নগর নিগম এবং জলকাল বিভাগ এই বিষয়ে কোনো তথ্য ভাগ করেনি। এমন পরিস্থিতিতে পিলার-২৯ খনন করার সময় এই বড় ত্রুটি সামনে আসে।

একাধিক ভবন অবিলম্বে খালি করার নোটিশ জারি
ঘটনার পর প্রশাসন সতর্ক হয়ে ওঠে এবং আশেপাশের ছয়টি ভবন খালি করার নোটিশ জারি করা হয়। এটি নিরাপত্তার খাতিরে নেওয়া একটি পদক্ষেপ, যাতে সেখানে বসবাসকারী মানুষকে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে রক্ষা করা যায়। এই ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গটি মুঘল আমলে নির্মিত হয়েছিল, যার বিশেষত্ব হলো এর মধ্য দিয়ে একসঙ্গে দুটি হাতি যাতায়াত করতে পারত। ১৮২৭ সালে ইংরেজরা এটিকে লখৌরি ইঁট এবং বারি মশলা দিয়ে নিকাশী ব্যবস্থা হিসাবে উন্নত করেছিল।

২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ শাহী নালা একাধিক এলাকার নিচে দিয়ে প্রবাহিত
শাহী নালার দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪ কিলোমিটার বলে জানা যায়, যা অस्सी থেকে কুনিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত এবং শহরের অনেক পুরনো এলাকা যেমন ভেলুপুর, গুরুবাগ, চক এবং মাছোদারী অতিক্রম করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আধিকারিক জানান যে, ভারী মেশিনের কম্পনে আশেপাশের ভবনগুলির বিপদ হতে পারে। তাই অবিলম্বে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোনো সমাধান বের করার পরেই নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

একাধিক বাড়ি, দোকান ও হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত
এদিকে, এই ঘটনার পর স্থানীয়দের সমস্যা অনেক বেড়ে গেছে, কারণ অনেক বাড়ি এবং দোকান হঠাৎ করে ‘অপ্রশিক্ষিত কাঠামো’ (Unprepared Structures) এর শ্রেণীতে চলে এসেছে। গোদোলিয়া এলাকায় একটি হোটেল খালি করার নোটিশও সাঁটানো হয়েছে। শাহী নালার কোনো মানচিত্র নগর নিগম বা জলকাল বিভাগের কাছে নেই, যার ফলে ভবিষ্যতে নির্মাণ কাজের সময় এমন পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই ধরনের ঐতিহাসিক নিদর্শন চিহ্নিত করে সেগুলোকে সংরক্ষণ করা উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *