তিন দিক থেকে ভারতকে ঘিরে ফেলার চীনের পরিকল্পনা, দুই কট্টর শত্রুকে এক ছাতার নিচে আনল বেইজিং, দিল্লির জন্য অশনি সংকেত

বেইজিং: চীন ভারতকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে। বেইজিং প্রথমবারের মতো একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করেছে, যেখানে একসময় কট্টর শত্রু বলে পরিচিত দুই দেশ পাকিস্তান ও বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আয়োজিত এই বৈঠকে চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুন ওয়েইডং, বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এবং পাকিস্তানের অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, পাকিস্তানি পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালোচ ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আলোচনার প্রথম পর্যায়ে যোগ দেন। চীনের কুনমিং শহরে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বৈঠকের পর প্রকাশিত বিবৃতি
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিবরা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামুদ্রিক বিষয় সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, তিনটি দেশ বৈঠকের সময় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো অনুসরণ ও বাস্তবায়নের জন্য একটি কার্যনির্বাহী গোষ্ঠী (ওয়ার্কিং গ্রুপ) গঠন করবে। এতে দাবি করা হয়েছে যে, চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ সহযোগিতা সত্যিকারের বহুপাক্ষিকতা এবং মুক্ত আঞ্চলিকতাকে মেনে চলে এবং কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করে নয়।
বৈঠকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালোচ ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করার জন্য চীনের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান চীন এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে গভীর সম্পর্ক চায়। বালোচ পাকিস্তান-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক গতির কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে, ইসলামাবাদ ঢাকার সাথে অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশে পাকিস্তান ও চীনের ভূমিকা
বাংলাদেশে গত বছর আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে পাকিস্তান দ্রুত তার প্রভাব বিস্তার করেছে। মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যকালে পাকিস্তান ঢাকা-এর সাথে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, কূটনীতি এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহ অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়িয়েছে। মনে করা হয় যে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সহিংস প্রতিবাদে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং আইএসআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর মধ্যে চীনও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের জোরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসনে নিজের প্রভাব বিস্তার করেছে।