ইরান ইসরায়েলে ১,০০০ ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, হাইফায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ

ইরান ইসরায়েলে ১,০০০ ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, হাইফায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ

নয়াদিল্লি, ২১ জুন: ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এখন প্রকাশ্য যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইরান ইসরায়েলের ওপর একযোগে ১,০০০ ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, যার ফলে ইসরায়েলের অনেক শহর, বিশেষ করে হাইফায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

হাইফার মেয়র এই হামলায় গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, “আমি খুব হতাশ অনুভব করছি। ইরানীরা আমাদের দুটি কৌশলগত অবস্থানে বোমা ফেলেছে, যার ফলে শহরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।”

মিডিয়া রিপোর্ট এবং সাম্প্রতিক সংবাদ অনুসারে, ইরান তার “ট্রু প্রমিজ” অভিযানের অধীনে এই ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে হাইপারসোনিক মিসাইল যেমন ফাতেহ-১ এবং সেজিল মিসাইল অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই মিসাইলগুলি হাইফার তেল শোধনাগার (বাজান তেল শোধনাগার) এবং অন্যান্য কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। টাইমস অফ ইসরায়েলের রিপোর্ট অনুযায়ী, হাইফা শোধনাগারের পাইপলাইন এবং ট্রান্সমিশন লাইনের ক্ষতি হয়েছে, যদিও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবুও, তেল সরবরাহ এবং পরিবেশগত ঝুঁকি বেড়েছে।

উল্লেখ্য, হাইফা, যা ইসরায়েলের একটি প্রধান বন্দর শহর এবং অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, এই হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওগুলিতে হাইফায় ধোঁয়া এবং আগুনের কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে, যা এই হামলার ভয়াবহতা তুলে ধরে। এছাড়াও, ইরান দাবি করেছে যে তারা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য সামরিক ঘাঁটিতেও হামলা চালিয়েছে।

হাইফার মেয়র এই হামলাকে “কৌশলগত এবং অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসাত্মক” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “ইরান আমাদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে, যার ফলে শহরের অবকাঠামোর গভীর ক্ষতি হয়েছে। আমরা এই সংকট মোকাবিলায় পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাজ করছি, কিন্তু এটি একটি কঠিন সময়।” মেয়রের এই বিবৃতি ইসরায়েলের নাগরিকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ভয় এবং অনিশ্চয়তা তুলে ধরে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে তারা তাদের আয়রন ডোম এবং অ্যারো-৩ মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বেশিরভাগ মিসাইলকে থামিয়ে দিয়েছে, কিন্তু কিছু মিসাইল আবাসিক এলাকা এবং কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে পড়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করেছেন যে, ইরানকে এই হামলার “भारी মূল্য” দিতে হবে। ইসরায়েল পাল্টা হামলায় ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটি এবং মিসাইল বেসগুলিতে হামলা বাড়িয়েছে, যার মধ্যে আראকের পারমাণবিক চুল্লি এবং কারমানশাহ ও তাবরিজের মিসাইল বেস অন্তর্ভুক্ত।

আমেরিকা ইসরায়েলের সমর্থন করে ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের সতর্কবার্তা দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা ইসরায়েলের সাথে আছি এবং ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেব না।” অন্যদিকে, ইরান দাবি করেছে যে এই হামলা ইসরায়েলের পূর্ববর্তী হামলার জবাব, যার মধ্যে তাদের পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

হাইফার ভারতের সাথেও কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে, কারণ এই বন্দর ভারত-ইসরায়েল বাণিজ্য এবং শক্তি সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। বিবিসি-র একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরান কর্তৃক হাইফাকে লক্ষ্যবস্তু করা কৌশলগত এবং অর্থনৈতিকভাবে ইসরায়েলকে দুর্বল করার চেষ্টা হতে পারে।

যুদ্ধের অষ্টম দিন চলছে, এবং উভয় দেশের মধ্যে হামলা তীব্র হচ্ছে। ইসরায়েলে তেল আবিব, হাইফা এবং বীরশেবার মতো শহরগুলিতে সাইরেন বাজছে, এবং মানুষ বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছে। ইরানেও পরিস্থিতি খারাপ, যেখানে ইসরায়েলি হামলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *