মা-বাবা সবসময় তাদের সন্তানদের সুরক্ষিত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তারা সবসময় চান যে শিশু সুস্থ ও হাসিখুশি থাকুক। কিন্তু অনেক সময় ভালোবাসা বা উদ্বেগে তারা এমন ভুল করে বসেন যা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে।

সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে বাবা-মায়ের একটি ছোট ভুলের কারণে ৯ বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

পুরো ঘটনাটি কী?
এই ঘটনার তথ্য দিয়েছেন পেডিয়াট্রিশিয়ান (শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ) ডাঃ পবন মান্ডাভিয়া। তিনি জানান যে, শিশুটির ডায়রিয়া হয়েছিল। সারারাত তার বাবা-মা তাকে বারবার চিনি মেশানো জল খাইয়েছেন যাতে সে ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু এই সময় তারা বুঝতে পারেননি যে এই চিনির জল শিশুর শরীরে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছে দিয়েছে।

ডাঃ মান্ডাভিয়ার মতে, ক্রমাগত চিনির জল পান করার ফলে সকালের মধ্যে শিশুটির রক্তে শর্করার মাত্রা ৫০০ ছাড়িয়ে যায়। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, শিশুটি কোমায় চলে যায় এবং তারপর তাকে বাঁচানো যায়নি।

ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস কী?
ডাক্তাররা বলেন যে, যখন কারো ডায়রিয়া হয়, তখন শরীরে জলের অভাব দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে মনে করেন যে চিনির জল দেওয়া উপকারী হবে। কিন্তু আসলে এতে শরীরে হঠাৎ করে চিনির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়, যার ফলে একটি গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যাকে ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস বলে। এতে মস্তিষ্কে ফোলা দেখা দেয় এবং রোগী কোমায় চলে যায়। শিশুটির সাথেও ঠিক এমনটাই হয়েছে।

ঘরের তৈরি চিনির জল বা জুস দেবেন না
ডাঃ মান্ডাভিয়ার স্পষ্ট বক্তব্য যে, ডায়রিয়ার পরিস্থিতিতে যেকোনো শিশু বা বড়দের শুধুমাত্র WHO দ্বারা স্বীকৃত ORS (ও.আর.এস.) দেওয়া উচিত। বাড়িতে তৈরি চিনির জল, লেবুর জল বা ফলের রস এই সময় খুবই ক্ষতিকর হতে পারে। ডাক্তাররা বলেন যে, যদি শিশু ORS বা জল পান না করে, তাহলে নিজে কোনো ঘরোয়া উপায় না করে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। কখনও ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া লেবুর জল বা চিনির দ্রবণ দেবেন না।

ডাঃ পবন মান্ডাভিয়া নিয়মিতভাবে প্যারেন্টিং এবং শিশুদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভিডিও শেয়ার করেন। তার ভিডিওগুলো মানুষকে সঠিক তথ্য দেয় এবং তাদের সচেতন করে তোলে। এই কারণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার কন্টেন্ট ব্যাপকভাবে পছন্দ এবং শেয়ার করা হয়।