জিন্স-টিশার্ট পরে ভিক্ষা করছে ৯ ‘সুন্দরী’ তরুণী, জীবনযাপন দেখে সন্দেহ হওয়ায়… বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর সত্য

উত্তর প্রদেশের বেরেলি (Bareilly) জেলা থেকে এক অদ্ভুত ঘটনা সামনে এসেছে। এখানে নয়জন তরুণী আধুনিক পোশাক (জিন্স-টপ) পরে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছিল এবং পথচারীদের কাছে সাহায্যের জন্য কাকুতি-মিনতি করছিল।
এই ঘটনার পর এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
‘আমরা সমস্যায় আছি, সাহায্য চাই’: পথচারীদের কাছে টাকা চাইছিল
এই তরুণীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে লোকজনকে বলছিল যে তারা খুব সমস্যায় আছে, তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ এবং তাদের সামান্য সাহায্যের প্রয়োজন। তাদের আবেগপূর্ণ কথায় এসে অনেক লোক ১০০-২০০ টাকা সাহায্যও করে দেয়। কিছু বুদ্ধিমান লোকের তাদের উপর সন্দেহ হয়। তাদের জীবনযাপন এবং পোশাক দেখে তাদের মনে হয় যে কিছু একটা গোলমাল আছে। এরপর তারা দ্রুত পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ ধরল, সবাই গুজরাটের তরুণী
খবর পেয়ে আমলা থানা পুলিশ (Amla Thana Police) দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং নয়জন তরুণীকেই ধরে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এই সব তরুণী গুজরাটের (Gujarat) আহমেদাবাদের (Ahmedabad) বাসিন্দা। পুলিশ যখন তাদের জিজ্ঞাসা করে যে তারা গুজরাট থেকে বেরেলি কীভাবে পৌঁছাল এবং এখানে কী করছে, তখন তারা এর কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেনি।
শান্তিভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা, জামিনে মুক্তি
পুলিশ জানিয়েছে যে, এই তরুণীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পথচারীদের আবেগপূর্ণ কথা বলে টাকা চাইছিল। পুলিশের মতে, এটি শান্তি বিঘ্নিত করার মতো ছিল। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এই তরুণীরা তাদের নাম জানিয়েছে, যার মধ্যে উর্মি (২৮), নীতু (২৫), কুসুম (২৫), অঞ্জলি (২১), সুনীতা (২৬), রীনা (২০), মনীষা (২০), পুনম (২৫) এবং টিনা (২৬) অন্তর্ভুক্ত। নয়জন তরুণীর বিরুদ্ধেই শান্তিভঙ্গের ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং তাদের এসডিএম কোর্টে (SDM Court) পেশ করা হয়। আদালত থেকে তাদের দুই লাখ টাকা ব্যক্তিগত মুচলেকায় (Personal Bond) মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গ্যাং হওয়ার সন্দেহ, পুলিশ তদন্ত করছে
স্থানীয়দের বক্তব্য, এটি কোনো সাধারণ ঘটনা মনে হচ্ছে না। তাদের সন্দেহ যে এটি কোনো বড় গ্যাং হতে পারে, যারা বিভিন্ন শহরে একই ধরনের কার্যক্রম চালায়। কিছু লোক এও জানিয়েছে যে, যদি কেউ তাদের টাকা না দেয়, তাহলে এই মেয়েরা মিথ্যা অভিযোগের (False Accusations) হুমকিও দিতে পারে। পুলিশও গভীরভাবে তদন্ত করছে যে, এই এলাকায় তাদের সাথে আর কোনো লোক সক্রিয় আছে কি না।
আমলা কোতোয়াল কুঁয়ার বাহাদুর সিং (Kunwar Bahadur Singh) জানিয়েছেন যে, তরুণীদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা আর্থিক অভাবকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে, কিন্তু অন্য রাজ্য থেকে এসে এভাবে রাস্তায় টাকা চাওয়া আইনত ভুল। তাই শান্তিভঙ্গের অভিযোগে চালান করে আইনি প্রক্রিয়া (Legal Process) সম্পন্ন করার পর তাদের আদালতে পেশ করা হয়েছে।
পুলিশের সাধারণ জনগণের কাছে আবেদন: সতর্ক থাকুন
এই ঘটনার পর পুলিশ সাধারণ নাগরিকদের কাছে আবেদন করেছে যে, যদি কেউ এভাবে রাস্তায় সাহায্য চাইতে দেখা যায়, তাহলে সম্পূর্ণ যাচাই না করে টাকা দেবেন না। একই সাথে, কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের (Suspicious Activity) খবর দ্রুত পুলিশকে জানান। পুলিশের বক্তব্য, অনেক সময় এমন ঘটনার পিছনে কোনো বড় অপরাধমূলক নেটওয়ার্কও (Criminal Network) থাকতে পারে, যা শহরে আইন-শৃঙ্খলার (Law and Order) জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। সমস্ত তরুণী জামিনে রয়েছে, কিন্তু পুলিশ তাদের পুরনো রেকর্ড এবং তাদের বাকি সঙ্গীদের সন্ধানে নেমেছে।