আমেরিকার ‘বন্ধু’ হয়েও ইরানে হামলার বিরোধিতা, মুসলিম বিশ্বে তোলপাড়!

আমেরিকার ‘বন্ধু’ হয়েও ইরানে হামলার বিরোধিতা, মুসলিম বিশ্বে তোলপাড়!

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেক দেশই এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে ওমান, পাকিস্তান এবং সৌদি আরব। এমনকি আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও সৌদি আরব এই হামলার নিন্দা করেছে।

সৌদি আরব বলেছে যে, আমেরিকার হামলা ইরানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। উল্লেখ্য, সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে উত্তেজনা থাকলেও, এই ঘটনার পর তারা উত্তেজনা কমানোর পক্ষে কথা বলেছে।

সৌদি আরবের অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক আহ্বান
সৌদি আরবের বিদেশমন্ত্রী তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) বলেছেন, “সৌদি আরব ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরানের উপর হামলায় দুঃখিত। বিশেষ করে যেভাবে আমেরিকা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, তা নিন্দনীয়।” এর আগে ১৩ই জুনও সৌদি আরব ইরানের উপর হামলার বিরোধিতা করেছিল। সৌদি আরব বলেছে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত একসঙ্গে কাজ করে এই উত্তেজনা বৃদ্ধি রোধ করা এবং একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করা, যাতে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

সৌদি আরব আরও বলেছে যে, মধ্য এশিয়ায় শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিটি প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন। উল্লেখ্য, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ ৯ দিন ধরে চলছে এবং এখন আমেরিকাও প্রকাশ্যে ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইরানের উপর মার্কিন হামলার প্রশংসা করে বলেছেন যে এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অত্যন্ত সাহসী সিদ্ধান্ত এবং এটি ইতিহাসকে বদলে দেবে। উল্লেখ্য, ১৩ই জুনই ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল। এরপর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। ইরানও ক্রমাগত ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছে। মার্কিন হামলার পরেও ইরান তেল আবিব সহ ১৬টি শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে, যেখানে ডজনখানেক লোক আহত হওয়ার খবর রয়েছে।

আমেরিকা এবং ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলেছেন যে ‘আমেরিকান স্টিলথ বোম্বার’ এবং ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের ‘বাঙ্কার-বাস্টার বোমা’ মাটির গভীরে স্থাপিত ইরানি পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ‘বাঙ্কার-বাস্টিং বোমা’কে ‘জিবিউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডনেন্স পেনিট্রেটর’ নামেও পরিচিত, যা মাটির নিচে লক্ষ্যবস্তুকে ভেদ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে ব্যবহৃত হয়। ইসরায়েলের কাছে এত শক্তিশালী অস্ত্র নেই যে তারা ইরানের এই পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করতে পারে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার ঘোষণা করেন। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘ইরনা’ তাদের খবরে দেশের ফোর্দো, ইসফাহান এবং নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে চালানো হামলার কথা নিশ্চিত করেছে। প্রায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে এবং তার বিমান প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করার পাশাপাশি পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ইউনিটগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যার পরেই আমেরিকাকে সরাসরি এতে জড়িত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *