হরমুজ বন্ধের হুমকি: ইরান কি তেলের ধমনী চেপে ধরবে?

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর দেশটির পার্লামেন্ট এক চাঞ্চল্যকর সিদ্ধান্তে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমোদন প্রয়োজন। মেজর জেনারেল কাওসারি জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হরমুজ প্রণালী বিশ্বের তেল সরবরাহের প্রায় ২০-৩০% পরিবহনের একমাত্র জলপথ। এটি বন্ধ হলে তেলের দাম আকাশছোঁয়া হতে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে মারাত্মক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। এই হুমকি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনাকে আরও জটিল করে তুলেছে, যেখানে গত ২০ মাসে ইসরায়েল-হামাস, হিজবুল্লাহ এবং সিরিয়ার সংঘাতে অশান্তি বিরাজ করছে।
হরমুজ প্রণালী, পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের মধ্যে ১৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সংকীর্ণ জলপথ, বিশ্বের তেল বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর সংকীর্ণতম স্থানে মাত্র ৩৩ কিলোমিটার প্রশস্ত, এবং শিপিং লেন মাত্র ৩ কিলোমিটার। প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ ব্যারেল তেল এবং বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস এই পথে পরিবহন হয়। ইরান যদি এই প্রণালী বন্ধ করে, তবে পারস্য উপসাগর থেকে তেল রপ্তানির ৮৮% বাধাগ্রস্ত হবে, কারণ বিকল্প পাইপলাইন সীমিত। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে, যা অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।