আমেরিকার চালে শেয়ার বাজারে ধস, ১৫ মিনিটে ৩ লাখ কোটি টাকা গায়েব!

মুম্বাই, ভারত: ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে আমেরিকার হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলেছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আমেরিকার হামলার পর পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে ইরান হরমুজ প্রণালী (Strait of Hormuz) বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে। এই প্রণালী দিয়ে বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করা হয় এবং এটি বন্ধ হলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট এই অস্থিরতার প্রভাব আজ বিশ্ববাজারে সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, যার ফলে শুধু এশিয়ান শেয়ার বাজার নয়, ভারতীয় শেয়ার বাজারও বড় ধরনের পতনের শিকার হয়েছে।
ভারতীয় শেয়ার বাজারে বড় পতন
সোমবার ভারতীয় শেয়ার বাজারে ব্যাপক পতন দেখা গেছে। বাজার খোলার পরপরই সেনসেক্স এবং নিফটি৫০ উভয়ই নিম্নমুখী হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে বিএসই সেনসেক্স ৮০৮ পয়েন্ট কমে ৮১,৫৯৯-তে নেমে আসে, আর নিফটি ২১৭ পয়েন্ট কমে ২৪,৮৯৫-তে চলে আসে। ইরানের ওপর আমেরিকার হামলার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে বাজারের অনুভূতি নেতিবাচক হয়েছে এবং এশিয়ান বাজারের চাপে ভারতীয় শেয়ার বাজারও লাল রঙে শেষ করেছে। আমেরিকার হামলার পর ইরানের পক্ষ থেকে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার আশঙ্কা বেড়েছে, যা ভারতীয় শেয়ার বাজারকে সংকটে ফেলেছে। বাজার পতনের ফলে বিএসই-তে তালিকাভুক্ত কো ম্পা নিগুলোর বাজার মূলধন ৪৪৮ লাখ কোটি টাকা থেকে কমে ৭৭৫ লাখ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ৩ লাখ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
বাজারের ওপর চাপ এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা
যদিও ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে আমেরিকার বোমা হামলা সংকট বাড়িয়েছে, তবে বাজারে এর প্রভাব সীমিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন মূল অনিশ্চিত কারণ হলো ইরানের প্রতিক্রিয়ার ধরণ এবং সময়। জিওজিৎ ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের প্রধান বিনিয়োগ কৌশলী ড. ভিকে বিজয়কুমার বলেছেন, “যদি ইরান মার্কিন প্রতিরক্ষা সুবিধাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে, তাদের ক্ষতি করে বা মার্কিন সামরিক কর্মীদের গুরুতরভাবে আঘাত করে, তাহলে আমেরিকার প্রতিক্রিয়া অনেক বড় হতে পারে এবং এতে সংকট আরও বাড়তে পারে।” তবে, বাজারের মূল্যায়ন হলো ইরান, আমেরিকা এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যা কিছু করতে পারে তার কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই পতনের মধ্যেও ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বিইএল), ভারতী এয়ারটেল এবং ট্রেন্ট টপ গেইনার ছিল। অন্যদিকে, ইনফোসিস, এইচসিএল টেক, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার লিমিটেড, ইটারনাল, টিসিএস, এশিয়ান পেইন্টস, পাওয়ার গ্রিড, রিলায়েন্স এবং আইটিসি ছিল প্রধান লুজার।