এবার আমেরিকাকে আঘাত হানবে ইরান, প্রকাশ্যে ৫টি কারণ!

জাতিসংঘ: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে আমেরিকার বাঙ্কার বাস্টার বোমা হামলার পর দুটি প্রশ্ন সামনে এসেছে: প্রথমত, ইরান কি আমেরিকার উপর পাল্টা আক্রমণ করবে? এবং দ্বিতীয়ত, ইরান কখন এই আক্রমণ চালাবে? এই দুটি প্রশ্নের মধ্যে প্রথমটির উত্তর দিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইারাভানি।
মেহের নিউজ এজেন্সির খবর অনুযায়ী, মার্কিন হামলা নিয়ে ডাকা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইারাভানি বলেছেন যে, আমেরিকার উপর পাল্টা হামলা হবেই। তিনি এর পেছনে পাঁচটি বৈধ কারণও তুলে ধরেছেন।
আমেরিকাকে আক্রমণের ৫টি বড় কারণ
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের রাষ্ট্রদূত ইারাভানি আমেরিকাকে আক্রমণের যে পাঁচটি কারণ উল্লেখ করেছেন, সেগুলি হলো:
১. সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন: ইারাভানির মতে, আমেরিকা একটি শান্ত দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা করেছে। ইরানের উপর আক্রমণ করার কোনো বৈধ কারণ আমেরিকার ছিল না। ইরান পারমাণবিক অপ্রসারণ চুক্তি মেনে চলছিল, তা সত্ত্বেও আমেরিকা আক্রমণ করেছে।
২. সন্ত্রাসবাদে মদদ: ইারাভানি অভিযোগ করেছেন যে আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্যে সমর্থন করে। গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে আমেরিকা নীরব রয়েছে। আমেরিকা মানবতাবিরোধী কাজকে উৎসাহিত করে। পুরো বিশ্ব হয়তো এই বিষয়ে নীরব থাকতে পারে, কিন্তু ইরান নীরব থাকবে না।
৩. আলোচনা ভঙ্গের অভিযোগ: ইারাভানি বিশ্বের উদ্দেশে বলেছেন যে, ১৬ জুন ওমানের মাস্কাটে আমেরিকার সাথে পারমাণবিক আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার দু’দিন আগেই, অর্থাৎ ১৩ জুন ইসরায়েল তাদের উপর হামলা চালায়। ইারাভানি প্রশ্ন তুলেছেন, “বলুন, চুক্তি থেকে কে পালাচ্ছে?”
৪. কাসেম সুলেমানির হত্যাকাণ্ড: ইারাভানি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কাসেম সুলেমানির হত্যার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। ইারাভানির বক্তব্য, সুলেমানি একজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, কিন্তু আমেরিকা তাকে হত্যা করেছে। এটি কিভাবে ন্যায্য হতে পারে?
৫. শান্তি আলোচনা বানচাল: জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত ইারাভানি বলেছেন যে, ইসরায়েলের সাথে সংঘাত থাকা সত্ত্বেও তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ইউরোপীয় দেশগুলির সাথে শান্তি আলোচনা নিয়ে কথা বলছিলেন, কিন্তু আমেরিকা তা সহ্য করতে পারেনি। তারা ইরানের স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছে। ইারাভানি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, “আমরা অবশ্যই প্রতিশোধ নেব।”
ইরানের সমর্থনে এগিয়ে আসা দেশগুলো
ইরানের সমর্থনে রাশিয়া ও চীন ছাড়াও পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া প্রকাশ্যে এসেছে। পাকিস্তান এটিকে সার্বভৌমত্বের উপর হামলা বলে অভিহিত করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে এই হামলাকে ভুল বলে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়াও ইরানের সমর্থনে বিবৃতি জারি করে আমেরিকার সমালোচনা করেছে।