মৃত্যুর পর চুল ফেলার আসল কারণ কী? ৯৯% মানুষ আজও এই সত্য জানেন না

যখন পরিবারের কোনো সদস্যের মৃত্যু হয়, তখন তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে চুল ফেলার (মুণ্ডন) প্রথা প্রচলিত আছে। এর পেছনে কিছু ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে।
চুল ফেলার কারণ
১. শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রকাশ: পরিবারের মৃত সদস্যের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং সম্মান প্রদর্শনের জন্য চুল ফেলা হয়। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে, তাদের চলে যাওয়ায় কতটা দুঃখ অনুভব করা হচ্ছে এবং তাদের সম্মানে একটি প্রিয় জিনিস ত্যাগ করা হচ্ছে। বিশ্বাস করা হয় যে, এতে মৃতের আত্মা শান্তি লাভ করে।
২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি: মৃত্যুর পর দীর্ঘক্ষণ মৃতদেহের সংস্পর্শে থাকার কারণে কিছু জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। এই জীবাণু দূর করার জন্য অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর চুল ফেলার, নখ কাটার, রোদে বসার এবং স্নান করার নিয়ম তৈরি করা হয়েছে। এক অর্থে, এই নিয়মগুলি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
৩. আত্মার আকর্ষণ থেকে মুক্তি: বলা হয় যে, মৃত ব্যক্তির আত্মা তার পরিবারের সদস্যদের সংস্পর্শে আসার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হল চুল। যদি আত্মা জীবিতদের প্রতি মোহাচ্ছন্ন হয়ে তাদের সাথে থাকতে চায়, তাহলে তারা মোক্ষ লাভ করতে পারে না। এই চুল আত্মাকে আকর্ষণ করে এবং পুনর্জন্মে বাধা দেয়। এই কারণেই মুখাগ্নি দানকারী ব্যক্তি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে নিজের চুল ফেলে মুণ্ডন করান। এতে মৃতের আত্মা সেই পরিবারের সদস্যের সংস্পর্শে আসতে পারে না এবং মোক্ষ প্রাপ্ত হয়।
মুণ্ডনের প্রথার প্রচলন
এখন আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন যে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে কেন মুণ্ডন করানো হয়। এই মুণ্ডন নিয়েও মানুষের বিভিন্ন নিয়ম প্রচলিত আছে। কিছু পরিবারে পরিবারের সব পুরুষ সদস্যের মুণ্ডন করানো হয়। আবার কিছু জায়গায় শুধু মৃত ব্যক্তির ছেলে বা মুখাগ্নি দানকারী ব্যক্তিরই মুণ্ডন হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আজও প্রায় এই নিয়ম মেনে চলেন। ধর্মীয় এবং বৈজ্ঞানিক উভয় দিক থেকেই এই মুণ্ডন প্রক্রিয়াকে ভালো মনে করা হয়।
আশা করি এই তথ্যটি আপনার ভালো লেগেছে। যদি হ্যাঁ হয়, তবে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে সবাই এই মুণ্ডনের পেছনের আসল কারণ জানতে পারে। এতে তাদের জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে এবং তারা আমাদের ধর্ম সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পারবে।