‘জুয়ারি ট্রাম্প, যুদ্ধ তুমি শুরু করতে পারো, কিন্তু শেষ করব আমরাই!’ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ইরানের সেনাবাহিনীর হুমকি

তেহরান, ইরান: ইরান ও আমেরিকার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এখন এক গুরুতর রূপ নিয়েছে। সোমবার ইরানের সামরিক কেন্দ্রীয় কমান্ড একটি কড়া সতর্কতা জারি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাসরি নিশানা করেছে।
একটি ভিডিও বার্তায় ইরানি মুখপাত্র ইংরেজিতে ট্রাম্পকে সম্বোধন করে বলেন, “মিস্টার ট্রাম্প, জুয়ারি… যুদ্ধ তুমি শুরু করতে পারো, কিন্তু শেষ করব আমরাই।” এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন আমেরিকা ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা করেছে এবং দাবি করেছে যে তারা তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।
ইরানের হুঁশিয়ারি: এখন আমেরিকাও বৈধ নিশানা
ইরানি সেনাবাহিনী আমেরিকার পদক্ষেপকে প্রকাশ্য আগ্রাসন বলে আখ্যা দিয়েছে এবং বলেছে যে এখন ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য আমেরিকার সামরিক ঘাঁটিগুলোও বৈধ লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। ইরান ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা শীঘ্রই এমন পাল্টা পদক্ষেপ নেবে, যার পরিণতি আমেরিকার জন্য অত্যন্ত গুরুতর হবে। ইরান আরও বলেছে যে এই যুদ্ধ এখন কেবল একটি দেশ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং এর পরিধি সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।
আমেরিকার পারমাণবিক হামলা উদ্বেগ বাড়িয়েছে
রবিবার সকালে আমেরিকা ফোরডো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে অবস্থিত ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে নির্ভুল বিমান হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে এই সাইটগুলো “সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে”। এই হামলার পরপরই এই অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, এই হামলাগুলোর কারণে এখন পুরো পশ্চিম এশিয়া এক গভীর সংকটে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা ও আইএইএ-এর পর্যবেক্ষণ
সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক এবং কৌশলগত বিশ্লেষক রাজীব ডোগরা আমেরিকার এই পদক্ষেপকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই হামলাগুলোর কারণে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ (Radiation Leak) এর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না, যা সীমান্তবর্তী দেশ এবং মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। ডোগরা বলেছেন যে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা আন্তর্জাতিক নিয়মের লঙ্ঘন এবং এর ফলে বৈশ্বিক পারমাণবিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব পড়তে পারে। এরই মধ্যে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) এক্স (পূর্বে টুইটার) এ জানিয়েছে যে, এখন পর্যন্ত কোনো এলাকায় রেডিয়েশন স্তরে বৃদ্ধি ঘটেনি, তবে তদন্ত চলছে।