ওভেন থেকে শুরু করে এসি এবং বেড পর্যন্ত সুবিধা, ভেতর থেকে কেমন দেখতে আমেরিকার বি-২ বোমারু বিমান?

ওভেন থেকে শুরু করে এসি এবং বেড পর্যন্ত সুবিধা, ভেতর থেকে কেমন দেখতে আমেরিকার বি-২ বোমারু বিমান?

ইরানের ৩টি পারমাণবিক কেন্দ্রে বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলার পর বি-২ বোমারু বিমান আমেরিকায় ফিরে এসেছে। ৩৭ ঘণ্টার এই অভিযানের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বোমারু বিমানের পাইলটদের প্রশংসা করেছেন।

নর্থরপ গ্রুমম্যান কো ম্পা নির এই বিমানটিকে মার্কিন বিমানবাহিনীর মেরুদণ্ড বলা হয়।

আফগানিস্তানে তালেবানদের তাড়ানোর জন্য ২০০১ সালে আমেরিকা এটি ব্যবহার করেছিল। সে সময় ৫টি বি-২ বোমারু বিমান তালেবানদের আস্তানায় ব্যাপক বোমা বর্ষণ করেছিল। বোমারু বিমানটির দাম ২ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৭৩৪ কোটি টাকা)।

৩৭ ঘণ্টা বিমানে কিভাবে ছিলেন পাইলটরা?
মার্কিন ঘাঁটি থেকে উড়ে গিয়ে ৩টি স্থাপনার ক্ষতি করে ফিরে আসা পর্যন্ত বি-২ বোমারু বিমানটি প্রায় ৩৭ ঘণ্টা ধরে আকাশে উড়ছিল। এই সময় ২ জন পাইলট পালা করে বোমারু বিমানটি পরিচালনা করছিলেন। বোমারু বিমানের ভেতরে ঘুমানো এবং খাওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে।

এছাড়াও বোমারু বিমানে শৌচাগারেরও ব্যবস্থা আছে, যার ফলে পাইলটদের এত দীর্ঘ সময় আকাশে থাকতে কোনো অসুবিধা হয়নি।

ভেতর থেকে বি-২ এর সেটআপ কেমন?
নিউ ইয়র্ক পোস্টের মতে, এই স্টেলথ বোমারু বিমানের ককপিটে একটি ছোট রেফ্রিজারেটর এবং ওভেন লাগানো আছে, যার ফলে পাইলটরা সহজেই নিজেদের খাবার গরম করতে পারেন। এই স্টেলথ বোমারু বিমানটি ওড়ানোর জন্য কমপক্ষে ২ জন পাইলটের প্রয়োজন হয়।

এই জেটে ঘুমানোর জন্য একটি জায়গা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে একজন পাইলট সহজেই ঘুমাতে পারেন। এছাড়াও জেটে একটি শৌচাগারও তৈরি করা হয়েছে, যা পাইলটরা ব্যবহার করেন।

বিমানটির আসনগুলো আরামদায়ক করা হয়েছে, যাতে পাইলটরা সহজেই দীর্ঘ দূরত্ব পর্যন্ত এটি ওড়াতে পারেন। এই স্টেলথ বোমারু বিমানটি প্রথম ১৯৮৯ সালে পরীক্ষা করা হয়েছিল।

এবার বোমারু বিমানের শক্তি সম্পর্কে জানুন
বি-২ বোমারু বিমান ৬৯ ফুট লম্বা এবং এর উচ্চতা ১৭ ফুট। এই বোমারু বিমানের পাখার বিস্তার ১৭১ ফুট। এর নকশা সিলুয়েট এবং ফ্লাইং উইং বিমান-এর মতো।

এই বোমারু বিমান রাডারেও অদৃশ্য হয়ে যায় বা খুব কম দেখা যায়। এর পাওয়ার প্ল্যান্টের কথা বলতে গেলে, এতে চারটি জেনারেল ইলেকট্রিক F118-GE-100 টার্বোফ্যান লাগানো থাকে।

কো ম্পা নির দাবি অনুযায়ী, এই স্টেলথ বোমারু বিমান ৫০,০০০ ফুটের বেশি উচ্চতায়ও পৌঁছতে পারে। এই জেটটি ২০ টন পেলোড সহজেই বহন করতে পারে।

নিশ্চিত হওয়ার পর ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিলেন
অ্যাক্সিওসের মতে, ইরানের উপর হামলা করার ৩ দিন আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একটি গোপন বৈঠক করেছিলেন। ট্রাম্প এই বৈঠকে কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, বি-২ বোমারু বিমান দিয়ে অভিযান সফল হবে কি না?

নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এর উত্তরে হ্যাঁ বলেছিলেন, যার পর ট্রাম্প সমস্ত কর্মকর্তাদের প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন। অবশেষে ট্রাম্প এটি দিয়ে হামলা করার অনুমতি দিয়েছিলেন।

বি-২ বোমারু বিমানই কেন ব্যবহার করা হলো?
পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য ইরান ইউরেনিয়াম মজুদ করে রেখেছে। ইউরেনিয়াম বাঙ্কারের ভেতরে রাখা আছে, যা শুধুমাত্র বাঙ্কার বাস্টার বোমা দ্বারা ধ্বংস করা যেতে পারে। এই বোমাটি শুধুমাত্র বি-২ বোমারু বিমানই বহন করতে পারে, তাই আমেরিকা এই বোমারু বিমানটি ব্যবহার করেছে।

এছাড়াও, এই বোমারু বিমানটি ধোঁকা দিতেও পারদর্শী। অ্যাক্সিওসের মতে, বোমারু বিমানটি যখন ইরানে হামলা চালিয়ে ফিরে আসে, তখন আমেরিকা এই খবর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *