ভারতের ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ সংগঠন এলসিনা (ELCINA) অনুমান করছে যে, চিনের বিরল মৃত্তিকা চুম্বকের উপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশের অডিও ইলেকট্রনিক্স সেক্টরে ২১,০০০-এর বেশি চাকরি ঝুঁকিতে রয়েছে।

এলসিনা তাদের অনুমান সম্পর্কে সরকারকেও সতর্ক করেছে। এপ্রিল মাসে চিন টারবিয়াম এবং ডিসপ্রোসিয়ামের মতো বিরল মৃত্তিকা পদার্থের উপর কঠোর রপ্তানি লাইসেন্সিং লাগু করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এই পদার্থগুলি ইলেকট্রনিক্সে ব্যবহৃত স্পিকার এবং অন্যান্য সরঞ্জামের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল। এই পদার্থগুলি থেকে উন্নত মানের চুম্বক তৈরি করা হয়।

দেশের সবচেয়ে পুরনো ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি বডি জানিয়েছে যে, এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। এর ফলে ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল অডিও ইলেকট্রনিক্স সেক্টরের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। এই কারণেই ম্যানুফ্যাকচারিং সংস্থাগুলি সম্পূর্ণ তৈরি স্পিকার মডিউল চিন থেকে আমদানি করার কথা ভাবছে।

কীভাবে চাকরি হারাতে পারে?
এলসিনা সতর্ক করেছে যে, এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতে দেশে স্পিকার এবং অডিও সিস্টেমের যন্ত্রাংশ তৈরির শিল্পকে খারাপভাবে প্রভাবিত করতে পারে। নোইডা এবং দক্ষিণ ভারতের মতো অঞ্চলে এই কাজ ব্যাপক আকারে হয়। যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে এই সেক্টরে ৫,০০০ থেকে ৬,০০০ প্রত্যক্ষ চাকরি এবং প্রায় ১৫,০০০ পরোক্ষ চাকরি চলে যেতে পারে।

বিরল মৃত্তিকা কেন জরুরি?
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, স্পিকার তৈরিতে ব্যবহৃত বিরল মৃত্তিকা চুম্বক (NDFEB) অত্যন্ত জরুরি। এগুলি বিশেষ করে ছোট কিন্তু শক্তিশালী স্পিকারগুলিতে ব্যবহৃত হয়। এই চুম্বকগুলির একটি স্পিকারে অংশ প্রায় ৫-৭% হয়। ভারতকে এই চুম্বক প্রায় পুরোপুরি আমদানি করতে হয় এবং ৯০%-এর বেশি সরবরাহ চিন থেকে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে চিনে সরবরাহের সমস্যা এবং বাধার কারণে সেখানকার চুম্বকগুলি ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।

জাপান-আমেরিকা থেকে কেন বিরল মৃত্তিকা আনা যাবে না?
এছাড়াও জাপান, আমেরিকা এবং ইউরোপীয় দেশগুলি থেকে এই চুম্বক ২ থেকে ৩ গুণ বেশি দামে পাওয়া যায় এবং সেখান থেকে সরবরাহও ততটা বেশি নয় যে ভারতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করতে পারে। টিভি প্রস্তুতকারী সংস্থা ভিডিওটেক্সও বলেছে যে, এই বিরল মৃত্তিকা চুম্বক বিশেষ করে টিভির স্পিকারের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এগুলি শুধু ছোট আকারেরই হয় না, বরং এদের পারফরম্যান্সও উন্নত হয়, তাই এদের বিকল্প পাওয়া কঠিন।