বিশ্বের সেই একমাত্র দেশ যেখানে রাত হয় না, ৪০ মিনিট পরই সূর্য ওঠে!

নরওয়ে, নরওয়েজিয়ান আর্কটিক: নরওয়ের সভালবার্ডে (Svalbard) এক অদ্ভুত প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে, যা এটিকে বিশ্বের বাকি অংশ থেকে আলাদা করে তোলে। এখানে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের মধ্যে ব্যবধান মাত্র ৪০ মিনিট।
আমরা সাধারণত দিন-রাতের স্বাভাবিক পরিবর্তনের সাথে অভ্যস্ত, কিন্তু সভালবার্ডে এই নিয়ম চলে না। সভালবার্ড নরওয়ের একটি অত্যন্ত সুন্দর এবং অনন্য অঞ্চল। এখানে সূর্য দুপুর ১২:৪৩ মিনিটে ডুবে যায় এবং মাত্র ৪০ মিনিট পর আবার উদিত হয়। এটি এক-দুদিনের ব্যাপার নয়, বরং এই দৃশ্য আড়াই মাস ধরে চলে। এই সময়ে সূর্য রাতেও আকাশে জ্বলজ্বল করে। এই কারণেই এই স্থানটিকে “কান্ট্রি অফ মিডনাইট সান” অর্থাৎ “মধ্যরাতের সূর্য”-এর দেশও বলা হয়।
কখন দেখা যায় মিডনাইট সান?
এই অনন্য ঘটনাটি মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত দেখা যায়। প্রায় ৭৬ দিন ধরে সূর্য অস্ত যায় না। এই সময়ে মানুষ রাতেও সূর্যালোক উপভোগ করতে পারে কারণ অন্ধকার হয় না। এই ঘটনার পেছনে একটি বিশেষ বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। আসলে, পৃথিবী তার অক্ষের উপর ২৩.৫ ডিগ্রি ঝুঁকে আছে। এই ঝুঁকির কারণেই পৃথিবীতে ঋতু এবং দিন-রাতের দৈর্ঘ্যে পার্থক্য আসে।
যখন পৃথিবীর উত্তর মেরু সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে, তখন সভালবার্ডের মতো উত্তরের অঞ্চলগুলো অবিরাম সূর্যের আলো পায়। এই সময়ে সেখানে সূর্যাস্ত হয় না এবং রাতেও সূর্য উজ্জ্বল থাকে।
ভারতে এমনটা কেন হয় না?
ভারত-এর মতো দেশগুলোতেও দিন-রাতের দৈর্ঘ্যে পার্থক্য আসে, কিন্তু ততটা বেশি নয়। যেমন, ২১ জুন ভারতে বছরের দীর্ঘতম দিন হয়। ২২ ডিসেম্বর দীর্ঘতম রাত হয়। কিন্তু ভারত নিরক্ষরেখার কাছাকাছি, যেখানে সভালবার্ড আর্কটিক সার্কেলের কাছাকাছি। এই কারণেই সেখানে দিন-রাতের মধ্যে বিশাল পার্থক্য দেখা যায়।
পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ
এই দৃশ্য এতটাই অনন্য যে, সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকরা সভালবার্ডে ঘুরতে আসেন। মানুষ রাতেও খোলা জায়গায় ঘুরে বেড়ায়, ছবি তোলে এবং সূর্যের আলোয় পিকনিক করে। এখানকার মানুষ এই অভিজ্ঞতাকে আনন্দ ও উৎসাহের সাথে উপভোগ করে, কারণ সব সময়ই আলো থাকে।
সভালবার্ডের এই ঘটনা আমাদের পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের অনন্য ব্যবস্থা বোঝার সুযোগ দেয়। এটি কেবল একটি প্রাকৃতিক ঘটনা নয়, বরং মানুষকে বিস্মিত করার মতো একটি অভিজ্ঞতা। এটাই এটিকে এত বিশেষ করে তোলে।