প্রতিটি ব্যথায় পেইনকিলার নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, জেনে নিন কীভাবে আপনার লিভার ও কিডনি রক্ষা করবেন

ন্যাশনাল ডেস্ক: আজকালকার দ্রুতগতির জীবনে ব্যথা দ্রুত শেষ করা সবারই ইচ্ছা। মাথাব্যথা হোক, মাসিকের ব্যথা হোক বা পেশী ক্লান্তি, এগুলোতে পেইনকিলার ট্যাবলেট নেওয়া একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু আপনি কি জানেন যে, বারবার এবং পরামর্শ ছাড়াই পেইনকিলার নেওয়া আপনার লিভার এবং কিডনির জন্য কতটা বিপজ্জনক হতে পারে? একটি ছোট ব্যথানাশক ট্যাবলেট আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বিষ হয়ে উঠছে না তো? পেইনকিলার (Painkiller) ওষুধ যেমন প্যারাসিটামল (Paracetamol), আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen) এবং ডাইক্লোফেনাক (Diclofenac) আমাদের শরীরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন (Prostaglandin) নামক রাসায়নিকের উৎপাদন বন্ধ করে। এই রাসায়নিকগুলি আমাদের শরীরে ব্যথা এবং প্রদাহের অনুভূতি তৈরি করে। যখন এদের মাত্রা কমে যায়, তখন আমরা ব্যথা থেকে মুক্তি পাই।
লিভারে পেইনকিলারের প্রভাব
অতিরিক্ত পরিমাণে প্যারাসিটামল সেবন লিভারের ক্ষতি করতে পারে। এটি লিভারের কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে দীর্ঘকাল ধরে নিলে হেপাটাইটিস (Hepatitis) বা লিভার ফেইলিউর (Liver Failure)-এর মতো গুরুতর রোগ হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল ট্যাবলেট বারবার নেওয়া উচিত নয়।
কিডনিতে এনএসএআইডি (NSAIDs)-এর প্রভাব
আইবুপ্রোফেন এবং ডাইক্লোফেনাকের মতো এনএসএআইডি (NSAIDs) ওষুধগুলি কিডনির রক্ত সরবরাহকে প্রভাবিত করে। এতে কিডনির কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে দুর্বল হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (Chronic Kidney Disease)-এর ঝুঁকি তৈরি হয়। বিশেষ করে যারা ইতিমধ্যেই কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, তাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি
একটানা এনএসএআইডি নিলে রক্তচাপ (Blood Pressure) বাড়তে পারে এবং এটি হৃদরোগেরও কারণ হতে পারে। বয়স্ক এবং যারা ইতিমধ্যেই হৃদরোগে ভুগছেন, তারা এই ক্ষেত্রে আরও বেশি সংবেদনশীল হন।
কখন সতর্ক হবেন?
যখন আপনি প্রতিটি ছোটখাটো সমস্যায় পেইনকিলার নিতে শুরু করেন।
যখন আপনি দীর্ঘকাল ধরে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খেতে থাকেন।
যদি আপনার লিভার বা কিডনি সম্পর্কিত কোনো সমস্যা থাকে।
ব্যথা নিরাময়ের নিরাপদ বিকল্প
হালকা গরম সেঁক বা হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে আরাম পান।
হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন।
পর্যাপ্ত ঘুম নিন এবং শরীরে জলের অভাব হতে দেবেন না।