তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হলে এই দেশগুলো হবে সবচেয়ে সুরক্ষিত, জানুন তালিকায় ভারতের নাম কোথায়?

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হলে এই দেশগুলো হবে সবচেয়ে সুরক্ষিত, জানুন তালিকায় ভারতের নাম কোথায়?

বর্তমানে বিশ্বের অনেক অংশে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বেশ কিছু দেশের মধ্যে যুদ্ধ চলছে, আবার কিছু দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতি ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এই পরিস্থিতি দেখে অনেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কাও করছেন। আসলে, ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে চলমান যুদ্ধে আমেরিকার জড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তবে, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কার মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন যে, ইসরায়েল এবং ইরান উভয়ই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবির পরেও পরিস্থিতি অস্থির রয়ে গেছে, যার কারণে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপর হুমকি বিরাজ করছে।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বাড়তি উদ্বেগ
বৈশ্বিক পর্যায়ে ক্রমবর্ধমান সংঘাত এই উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে যে, এটি কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বাভাস? মনে করা হচ্ছে যে, যদি সংঘাত বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হয়, তাহলে এতে সারা বিশ্বের মিত্ররা জড়িত হতে পারে।

সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল হিসেবে উঠে আসবে এই দেশগুলো
এনডিটিভি মেট্রোর উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, বিশ্বযুদ্ধের সময় এমন অনেক দেশ আছে, যারা কম প্রভাবিত হবে। এই দেশগুলো তাদের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, সামরিক নিরপেক্ষতা এবং স্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করতে পারে। তবে এই পুরো তালিকায় ভারতের নাম অন্তর্ভুক্ত নেই। আসুন এদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক…

আন্টার্কটিকা (Antarctica): আন্টার্কটিকার সবচেয়ে দক্ষিণতম অবস্থান এটিকে পারমাণবিক যুদ্ধের সময় সবচেয়ে নিরাপদ স্থানগুলির মধ্যে একটি করে তোলে। এখানে পারমাণবিক শক্তিগুলো থেকে অনেক বেশি দূরত্ব রয়েছে। এখানে ১৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার জুড়ে আশ্রয় নেওয়ার অনেক জায়গা আছে। তবে, এখানকার কঠোর, বরফপূর্ণ জলবায়ু মানুষের বেঁচে থাকার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

আইসল্যান্ড (Iceland): আইসল্যান্ডকে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই দেশটি কখনও পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে অংশ নেয়নি। এর দূরবর্তী ভৌগোলিক অবস্থান এটিকে ইউরোপে প্রচলিত যুদ্ধের জন্য কম সংবেদনশীল করে তোলে। মনে করা হয় যে, যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়, তবে এখানে পারমাণবিক বিস্ফোরণে কম পরিমাণে ক্ষতি হতে পারে।

নিউজিল্যান্ড (New Zealand): নিউজিল্যান্ডকেও বেশ শান্তপ্রিয় দেশ হিসেবে গণ্য করা হয়। বৈশ্বিক শান্তি সূচকে এটি দ্বিতীয় স্থানে আসে। এর পাহাড়ি এলাকা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। এই কারণেই রাশিয়া এবং পশ্চিমের সংঘাতের মধ্যে এটিকে লক্ষ্যবস্তু করার সম্ভাবনা কম। তবে, লক্ষণীয় বিষয় হলো, নিউজিল্যান্ড ইউক্রেনকে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করেছে।

সুইজারল্যান্ড (Switzerland): দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও সুইজারল্যান্ড বেশ সুরক্ষিত ছিল। মনে করা হয় যে, এর পাহাড়ি ভূখণ্ড এবং পারমাণবিক আশ্রয়কেন্দ্রের কারণে এটি ভালোভাবে সুরক্ষিত। এর রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা এটিকে শত্রুদের থেকে সুরক্ষিত রেখেছে।

গ্রিনল্যান্ড (Greenland): গ্রিনল্যান্ডকে বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গ্রিনল্যান্ডের দূরবর্তী অবস্থান এবং রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা এটিকে একটি আসাম্ভব লক্ষ্যবস্তু করে তোলে।

ইন্দোনেশিয়া (Indonesia): মনে করা হয় যে, ইন্দোনেশিয়া একটি নিরপেক্ষ বিদেশ নীতি অনুসরণ করে, যেখানে বিশ্ব শান্তির উপর জোর দেওয়া হয়। এর স্বাধীন অবস্থান এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক সংঘাতে এর জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

টুভালু (Tuvalu): টুভালু মাত্র ১১০০০ জন বাসিন্দা সহ একটি ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র। টুভালুর সীমিত অবকাঠামো এবং সম্পদ এটিকে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যবস্তু করে তোলে। হাওয়াই এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে এর অবস্থান ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা প্রদান করে, যে কারণে এটিকে কোনো বড় যুদ্ধের সময় সুরক্ষিত বলে মনে করা হয়।

ভুটান (Bhutan): কোনো যুদ্ধের সময় ভুটানকেও একটি নিরাপদ স্থান হিসেবে দেখা যেতে পারে। ১৯৭১ সালে নিরপেক্ষতা ঘোষণার পর থেকে ভুটান তার পাহাড়ি এবং ভূ-আবদ্ধ ভূগোলের কারণে সুরক্ষিত রয়েছে।

চিলি (Chile): তথ্য অনুযায়ী, চিলির ৪,০০০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলরেখা এবং এর প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রদান করে। এর উন্নত অবকাঠামো এটিকে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে একটি করে তোলে।

ফিজি (Fiji): অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রায় ২,৭০০ মাইল দূরে, ফিজির দূরবর্তী অবস্থান, সামরিক ফোকাসের অভাব এবং ঘন বন এটিকে প্রতিরোধের একটি ভালো স্থান করে তোলে। এর ন্যূনতম সেনাবাহিনী এবং বৈশ্বিক শান্তি সূচকে উচ্চ স্থান এটিকে আরও সুরক্ষিত করে তোলে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *