ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতির পরেও ভারতীয় শেয়ারবাজারে পতন, জেনে নিন কারণ

ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতির পরেও ভারতীয় শেয়ারবাজারে পতন, জেনে নিন কারণ

২৪শে জুন ভারতীয় শেয়ারবাজারে আবারও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার আঁচ অনুভূত হয়েছে। দিনের শুরুটা দারুণ তেজিভাব নিয়ে হলেও, ইজরায়েল-ইরান সংঘাতের খবর সামনে আসতেই মুনাফা অর্জন বেড়ে যায় এবং বাজার তার সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ১,১০০ পয়েন্ট পর্যন্ত নেমে আসে।

দিনের শুরু দুর্দান্ত, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সামান্য বৃদ্ধিই বাকি রইল
সেনসেক্স ৮২,৫৩৪.৬১ স্তরে শুরু হয়ে ৮৩,০১৮-এর ইন্ট্রাডে হাই (intraday high) পর্যন্ত পৌঁছায়, অর্থাৎ প্রায় ১,১০০ পয়েন্টের বৃদ্ধি। কিন্তু এরপর মুনাফা অর্জন এবং উত্তেজনার খবর বাজারকে টেনে নামিয়ে আনে এবং সেনসেক্স ৮১,৯০০-এর সর্বনিম্ন স্তরে নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত সেনসেক্স মাত্র ১৫৮ পয়েন্ট উপরে, অর্থাৎ ০.১৯ শতাংশের সামান্য বৃদ্ধিসহ ৮২,০৫৫.১১-এ বন্ধ হয়।

অন্যদিকে, নিফটি ৫০ (Nifty 50) ২৫,১৭৯.৯০-এ শুরু হয়ে ২৫,৩১৭.৭০-এর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়, কিন্তু এরপর এটিও পিছলে ২৫,৯৯৯.৭০ পর্যন্ত নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত নিফটি ৭২ পয়েন্ট উপরে, অর্থাৎ ০.২৯ শতাংশের বৃদ্ধিসহ ২৫,০৪৪.৩৫-এ বন্ধ হয়। মিডক্যাপ (Midcap) এবং স্মলক্যাপ (Smallcap) ইনডেক্স কিছুটা ভালো পারফরম্যান্স করেছে, বিএসই মিডক্যাপ ০.৫৬ শতাংশ এবং স্মলক্যাপ ০.৭১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইজরায়েল-ইরান উত্তেজনা বাজারের অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়াল
গণমাধ্যম রিপোর্ট অনুযায়ী, ইজরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ইরানের ওপর পাল্টা হামলার নির্দেশ দিয়েছে। ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন যে, ইরান মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, যা আমেরিকা কর্তৃক ঘোষিত যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট অবমাননা ছিল। এর জবাবে তিনি তেহরানে উচ্চ-তীব্রতার সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও ইরান এই অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে। এই ঘটনা বাজারে অস্থিরতা এবং ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে।

আগামীতেও কি এমনই থাকবে?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এখন ‘নতুন স্বাভাবিক’ হয়ে উঠছে। যতক্ষণ এই পরিস্থিতি বজায় থাকবে, বাজার এভাবেই উত্থান-পতনের মুখোমুখি হতে থাকবে। এছাড়াও, অপরিশোধিত তেলের দামের অস্থিরতাও ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক দেশ, এবং যদি দাম বাড়ে তাহলে বাণিজ্য ঘাটতি, টাকার দুর্বলতা, মুদ্রাস্ফীতি এবং কর্পোরেট মুনাফার উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। আপাতত, ব্রেন্ট ক্রুড (Brent Crude) প্রায় ৪ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে, কারণ বিনিয়োগকারীরা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *