‘ইরান ইউরেনিয়াম বাঁচিয়ে নিল! ৯টি পরমাণু বোমা…’, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের বিবৃতিতে তোলপাড়

‘ইরান ইউরেনিয়াম বাঁচিয়ে নিল! ৯টি পরমাণু বোমা…’, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের বিবৃতিতে তোলপাড়

ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার সময় আমেরিকা ইরানের তিনটি পারমাণবিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল। এটি ছিল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সামরিক হামলাগুলোর মধ্যে একটি। এই আক্রমণে হাইপারসোনিক মিসাইল, ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং বাঙ্কার বাস্টার বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল।

এগুলোর প্রধান লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা। তবে, এর মধ্যেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স (J. D. Vance) এবিসি নিউজকে (ABC News) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন। তার মতে, ৪০০ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এই বিবৃতি মার্কিন কৌশলের উপর প্রশ্ন তুলেছে।

এটি সেই ৬০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, যা ৯০% পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে বোমা-গ্রেডে পরিণত করা যায়। যদি ইরান এই ইউরেনিয়াম নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে থাকে, তাহলে তারা অন্তত নয়টি পরমাণু বোমা তৈরির অবস্থানে আছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা নিউইয়র্ক টাইমসকে (New York Times) জানিয়েছেন যে, হামলা শুরু হওয়ার আগেই ইরান ইউরেনিয়াম এবং সম্পর্কিত সরঞ্জামগুলি গোপন স্থানে সরিয়ে নিয়েছিল। স্যাটেলাইট ছবিতে ইরানের ফোর্দো প্ল্যান্টে হামলার আগে ভারী ট্রাক চলাচল দেখা গেছে। ফোর্দো প্ল্যান্ট পাহাড়ের ভিতরে অবস্থিত এবং এটিকে অভেদ্য বলে মনে করা হয়, তাই আমেরিকা B-2 স্পিরিট বোমারু বিমান থেকে GBU-37 বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলেছিল।

ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরিয়ে ফেলেছে
আমেরিকা ইরানের তিনটি পারমাণবিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল, যার মধ্যে ফোর্দো, নাতাঞ্জ, ইসফাহান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পাওয়া যায়নি। ইরানের কর্মকর্তারা প্রকাশ করেছেন যে, তারা হামলার আশঙ্কায় আগেই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলেছিল। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি (Rafael Grossi)-ও বলেছেন যে, ইরান হামলার দিনই জানিয়েছিল যে তারা তাদের পারমাণবিক সম্পদ সুরক্ষিত করছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, ইরান গোপন গোয়েন্দা সতর্কতার কারণে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং তারপর হামলা: কার উপর ভরসা করা যায়?
২০২৫ সালের জুনের সকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ঘোষণা করেছিলেন যে, ইরান এবং ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, কিন্তু এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই ইরান ইসরায়েলের উপর আবারও তীব্র মিসাইল হামলা চালায়। ইসরায়েল এর জবাবে ইরানের উপর বড় হামলার হুমকি দিয়েছে। এর আগে ২৩শে জুন ইরান বাশের আল ফাতেহ (Basher Al Fateh) নামক সামরিক অভিযানের অধীনে কাতারের আল উদাইদ এয়ারবেসে (Al Udeid Airbase) ব্যালিস্টিক মিসাইল দিয়ে হামলা চালায়। ইরাকের আইন আল-আসাদ এয়ারবেসকেও (Ain al-Asad Airbase) লক্ষ্যবস্তু করা হয়। কাতার মিসাইলগুলো থামানোর দাবি করে এবং এটিকে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *