আপনরাই শেখ হাসিনার সঙ্গে খেলা করেছে, বাংলাদেশে বড় সাক্ষ্য দিয়েছে

বাংলাদেশের ক্ষমতার অলিন্দে চাঞ্চল্য তীব্র হয়েছে। যে মুখগুলো একসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) সবচেয়ে বিশ্বস্ত সেনাপতি হিসেবে পরিচিত ছিল, তারাই এখন তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে। এমন এক সময়ে যখন একটি বড় তদন্ত আবার খোলা হচ্ছে।
আসলে, পিলবাগানে (Peelbagan) সংঘটিত ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী ন্যাশনাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেশন কমিশন (National Independent Investigation Commission – NIIC) বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু চমকপ্রদ দাবি করেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আওয়ামী লীগের (Awami League) দুই বরিষ্ঠ নেতা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাও ইমেইলের (Email) মাধ্যমে।
কোন দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন?
সাবেক বিডিআর (BDR) ডিজি এবং এখন তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এ.এল.এম. ফজলুর রহমান (A.L.M. Fazlur Rahman) জানিয়েছেন যে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক (Jahangir Kabir Nanak) এবং দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আজম (Mirza Azam) তাদের সাক্ষ্য ইমেইলের মাধ্যমে দিয়েছেন। এই দুই নেতা বর্তমানে দেশ থেকে পলাতক বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদেরও সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে
তদন্ত কমিশন এ পর্যন্ত ৮ জন বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাক্ষ্য নিয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন নেতাকে জেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, ৩ জন ব্যক্তিগতভাবে বক্তব্য দিয়েছেন এবং বাকি ২ জন ইমেইলের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য রেখেছেন। রহমানের মতে, কমিশন এ পর্যন্ত ৫৫ জন সামরিক কর্মকর্তার কাছ থেকে বক্তব্য নিয়েছে। এর মধ্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধানদের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বড় কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত।
বন্দী এবং খালাসপ্রাপ্ত জওয়ানদের সাক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত
২৫ জন বিডিআর জওয়ান, যাদের এই মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল, তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অন্যদিকে, ২৯ জন জওয়ান যারা মুক্তি পেয়েছেন, তাদেরও বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। প্রায় ২০ জন সাধারণ নাগরিক, যার মধ্যে সাংবাদিক, আমলা এবং সাবেক তদন্ত কমিটির সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত, তাদের সাথেও কথা বলা হয়েছে। এমনকি টেলিকম এবং বাণিজ্য খাতের ৯ জন পেশাদার ব্যক্তিরও বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।
মোট কতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে?
এ পর্যন্ত মোট ১৫৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং ৫০ জনের সাক্ষ্য এখনও বাকি আছে। কমিশন ৬টি বিদেশি দূতাবাস এবং জাতিসংঘ অফিসের কাছেও তথ্য চেয়েছে। কমিশন জনতা এবং মিডিয়ার কাছে আবেদন করেছে যে, যদি কারো কাছে পিলবাগান হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত কোনো তথ্য থাকে, তবে তা শেয়ার করুন।