সিবিএসই দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় কি বিকল্প মিলবে? মার্কশিটে নম্বর কীভাবে যোগ হবে? জানুন বিস্তারিত

দেশের বৃহত্তম শিক্ষাবোর্ড সিবিএসই (CBSE) থেকে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আপডেট সামনে এসেছে। সিবিএসই দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা বছরে দু’বার আয়োজনের নিয়ম অনুমোদন করেছে। ২০২৬ সাল থেকে বছরে দু’বার বোর্ড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সিবিএসই দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা বছরে দু’বার অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে এবং দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা মে মাসে হবে। প্রথম ধাপের ফলাফল এপ্রিল মাসে এবং দ্বিতীয় ধাপের ফলাফল জুন মাসে প্রকাশিত হবে। ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট (Internal Assessment) শুধুমাত্র একবারই করা হবে।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বোর্ড পরীক্ষার প্রথম ধাপে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক হবে, তবে দ্বিতীয় ধাপটি ঐচ্ছিক থাকবে। বোর্ড স্পষ্ট করেছে যে, অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন (ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট) শুধুমাত্র একবারই করা হবে, শিক্ষার্থীরা একটি বা উভয় ধাপের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুক না কেন। সিবিএসই-এর লক্ষ্য এই ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আরও ভালো সুযোগ দেওয়া, যাতে তারা তাদের প্রস্তুতি অনুযায়ী সেরা পারফরম্যান্স করতে পারে এবং মানসিক চাপও কমে। জাতীয় শিক্ষা নীতির অধীনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিবিএসই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ২০২৬ সাল থেকে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা বছরে দু’বার অনুষ্ঠিত হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের ওপর একক সুযোগের বোঝা না থাকে এবং তারা তাদের পরিশ্রমের সেরা ফল পেতে পারে। এসআর ডিএভি পাবলিক স্কুল পুন্দাগের অধ্যক্ষ ড. তাপস ঘোষ জানিয়েছেন যে, প্রথম পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে হবে এবং তাতে বসা বাধ্যতামূলক হবে। দ্বিতীয় পরীক্ষা মে মাসে নেওয়া হবে, যা ঐচ্ছিক হবে। অর্থাৎ, যদি কোনো শিক্ষার্থী প্রথম প্রচেষ্টায় তার প্রত্যাশা অনুযায়ী নম্বর না পায়, তাহলে দ্বিতীয় সুযোগে সে তার ফল উন্নত করতে পারবে। শিক্ষাবর্ষের সময় অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন শুধুমাত্র একবারই করা হবে। এছাড়াও, শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, গণিত, সমাজবিজ্ঞান এবং ভাষাগুলির মধ্যে যেকোনো তিনটি বিষয়ে তাদের নম্বর উন্নত করার বিকল্প বেছে নিতে পারবে। এই সিদ্ধান্ত জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-এর সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে, যার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের ওপর বোর্ড পরীক্ষার উচ্চ-চাপ অর্থাৎ চাপ কমানো। এখন আর এটি জরুরি হবে না যে একটি মাত্র পরীক্ষা তাদের ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণ করবে। যে স্কুলগুলো শীতকালীন সেশনে পড়ায়, তাদের শিক্ষার্থীদের যেকোনো ধাপে পরীক্ষা দেওয়ার বিকল্প থাকবে, যাতে সময় এবং আবহাওয়ার সীমাবদ্ধতা শিক্ষার্থীদের পথে বাধা না হয়।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের জন্য পরামর্শ
বছরজুড়ে পড়াশোনাকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে, যাতে উভয় সুযোগই খোলা থাকে। প্রথম প্রচেষ্টাতেই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করুন। দ্বিতীয় পরীক্ষাকে একটি ব্যাকআপ হিসেবে নিন। মানসিক স্বাস্থ্যেরও যত্ন নিন। বারবার পরীক্ষার বোঝায় নিজেকে ক্লান্ত করবেন না। এই পরিবর্তন ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হবে, অর্থাৎ বর্তমান অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যখন দশম শ্রেণিতে উঠবে তখন এই নিয়ম কার্যকর হবে। সিবিএসই এই সিদ্ধান্তকে পর্যায়ক্রমে কার্যকর করবে এবং স্কুলগুলোকে আগে থেকে তথ্য ও নির্দেশনা দেবে।
নতুন ব্যবস্থার উদ্দেশ্য
নতুন ব্যবস্থার প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের ওপর বোর্ড পরীক্ষার চাপ কমানো। দুটি সুযোগ দেওয়ার ফলে শিক্ষার্থীরা আরও ভালো পারফরম্যান্স করতে পারবে। শুধুমাত্র সেই পরীক্ষার ফলাফলই বৈধ হবে যেখানে শিক্ষার্থী ভালো নম্বর পেয়েছে। শিক্ষার্থী বছরে দু’বার পরীক্ষা দিতে পারবে। যদি প্রথমবারে শিক্ষার্থী তার পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট না হয়, তাহলে সে পরবর্তী পরীক্ষায় আবারও অংশগ্রহণ করতে পারবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যদি শিক্ষার্থী দু’বারই পরীক্ষা দেয়, তাহলে যেবার সে ভালো নম্বর পাবে, সেই নম্বরই তার মার্কশিটে রেকর্ড করা হবে। আপাতত, এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র দশম শ্রেণির জন্য কার্যকর করা হচ্ছে, তবে সূত্র অনুযায়ী, দ্বাদশ শ্রেণিতেও একই ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। উভয় পরীক্ষার সিলেবাস একই থাকবে, যাতে শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে না হয়। ড. তাপস ঘোষ জানিয়েছেন যে, শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত সুযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো এটি নিশ্চিত করা যে তারা কম চাপে আরও ভালো পারফরম্যান্স করতে পারে। এই সিস্টেম তাদের সক্ষমতা আরও ভালোভাবে তুলে ধরার সুযোগ দেবে।