আধুনিক যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তৈরি হয়েছে। এখন এক দেশ অন্য দেশের সঙ্গে সামরিক শক্তির মাধ্যমে লড়াই করার পরিবর্তে ক্ষেপণাস্ত্রের বিকল্পকে বেশি পছন্দ করছে। উদাহরণস্বরূপ, ইসরায়েল (Israel) এবং ইরানের (Iran) মধ্যে চলমান যুদ্ধ দেখা যেতে পারে। দুটি দেশ ২০০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে অবস্থিত। এক দেশ অন্য দেশে সামরিক অভিযান চালানোর পরিবর্তে যুদ্ধক্ষেত্রে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন (drone) এবং ফাইটার জেট (fighter jet) ব্যবহার করছে। এর কারণ হল, কম খরচে ক্ষেপণাস্ত্র শত্রুর বেশি ক্ষতি করতে পারে, যা হয়তো সেনা পাঠিয়ে করা সম্ভব নয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিক্ষেপ করা হয় এবং তারা তাদের লক্ষ্যকে নির্ভুলভাবে আঘাত করে।

তবে, দুটি পরিস্থিতি রয়েছে যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র তার লক্ষ্যকে আঘাত করতে পারে না। প্রথমত, যদি তাদের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (Air Defence System) দিয়ে আকাশেই গুলি করে নামানো হয়, এবং দ্বিতীয়ত, ব্ল্যাকআউটের (Black Out) সময় এমনটা হয়। এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমে ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে গুলি করে নামানো হয়। তবে, প্রশ্ন ওঠে যে, যখন ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে লক্ষ্যে লক করে পাঠানো হয়, তখন ব্ল্যাকআউটের সময় তাদের নিশানা কিভাবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়? আসুন এ বিষয়ে জেনে নিই।

ব্ল্যাকআউট কী?
ব্ল্যাকআউট তখন করা হয়, যখন মনে হয় যে কোনো শহর বা দেশের কোনো অংশকে শত্রু ক্ষেপণাস্ত্র, ফাইটার জেট বা ড্রোন দিয়ে লক্ষ্য করতে চলেছে। এতে ঘর, দোকান, অফিস সব জায়গায় আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তায় চলমান গাড়িগুলোকে থামিয়ে ইঞ্জিন এবং হেডলাইট (headlight) বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র জরুরি যানবাহন ছাড়া বাকি সব ধরনের চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। লোকজনকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই সময়ে পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর টহল বৃদ্ধি পায়।

ব্ল্যাকআউটে কেন নির্ভুল আঘাত হানা যায় না?
ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তাদের লক্ষ্যকে জিপিএস (GPS), রাডার (Radar) এবং ইনফ্রারেড সেন্সরের (Infrared Sensor) মাধ্যমে শনাক্ত করে আঘাত করে। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্য থেকে প্রতিফলিত আলো বা তাপকে অনুসরণ করে। এমন পরিস্থিতিতে যখন ব্ল্যাকআউট করা হয়, তখন জিপিএস বা অন্যান্য গাইডেন্স সিস্টেমের (guidance system) লক্ষ্য শনাক্ত করতে অসুবিধা হয়। যদিও তারা জিপিএস থেকে নির্ভুল তথ্য পাচ্ছে, তবুও অন্ধকারে নির্ভুলভাবে হামলা করতে ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর অসুবিধা হয়। এই কারণেই শত্রুর হামলা মোকাবিলায় ব্ল্যাকআউটের সাহায্য নেওয়া হয়।