আমেরিকার যে বি-২ বোমারু বিমান ইরানে তাণ্ডব চালিয়েছে, তার ল্যান্ডিংয়ের ভিডিও সামনে এল

আমেরিকার যে বি-২ বোমারু বিমান ইরানে তাণ্ডব চালিয়েছে, তার ল্যান্ডিংয়ের ভিডিও সামনে এল

মার্কিন বিমানবাহিনী (US Air Force) ২১শে জুন মধ্যরাতে একটি গোপন এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক অভিযান চালায়, যার নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন মিডনাইট হ্যামার (Operation Midnight Hammer)। এই অভিযানের অধীনে, আমেরিকার মিসৌরি (Missouri) রাজ্যের হোয়াইটম্যান এয়ারফোর্স বেস (Whiteman Airforce Base) থেকে সাতটি বি-২ স্পিরিট স্টিলথ বোমারু বিমান (B-2 Spirit Stealth Bombers) উড়েছিল এবং একটানা ৩৭ ঘণ্টার দীর্ঘ উড়ানের পর ইরানের তিনটি পরমাণু ঘাঁটি লক্ষ্য করে বোমা ফেলেছিল।

জানা যাচ্ছে যে, এই হামলায় আমেরিকা তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী বাঙ্কার-ভেদী বোমা জিবিইউ-৫৭ এমওপি (GBU-57 MOP) ব্যবহার করেছিল। এখন এই পুরো মিশনের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বিমানগুলিকে রাত ১২:০১ টায় উড়তে এবং মিশন শেষে অবতরণ করতে দেখা যাচ্ছে।

৩৭ ঘণ্টা ধরে চলেছে মিশন
আপনার তথ্যের জন্য জানিয়ে রাখি যে, আমেরিকার এই অভিযান ২১শে জুন রাতে শুরু হয়েছিল এবং পরের দিন পর্যন্ত চলেছিল। মোট উড়ানের সময়কাল ছিল ৩৭ ঘণ্টা। জানা গেছে যে, ২০০১ সালে অপারেশন এন্ডিউরিং ফ্রিডম (Operation Enduring Freedom)-এর পর এটি আমেরিকার বি-২ বিমানের দ্বিতীয় দীর্ঘতম উড়ান ছিল। তখন বি-২ ৪৪ ঘণ্টা উড়েছিল। এবার মিশনে জড়িত সমস্ত বি-২ বিমান একটানা উড়ে, লক্ষ্যে বোমা ফেলে এবং নিরাপদে ফিরে আসে, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, এই সবই একটি মিশনেই ঘটেছিল।

কোন বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল?
এই অপারেশনে বি-২ বোমারু বিমানগুলিকে জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটর (GBU-57 Massive Ordnance Penetrator – MOP) দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছিল। এটি ৩০,০০০ পাউন্ডের একটি বোমা যা মাটির ২০০ ফুট নিচে ঢুকে ফেটে যেতে পারে। এর বিশেষ ফিউজ সিস্টেম (fuse system) দেরিতে ফেটে, যাতে ভিতরে সর্বোচ্চ ক্ষতি হয়। এই বোমা শুধুমাত্র বি-২ বিমান থেকেই ফেলা যায়। এবার আমেরিকা ইরানের তিনটি পরমাণু ঘাঁটি – ফোর্দো (Fordo), নাতাঞ্জ (Natanz) এবং ইসফাহানকে (Isfahan) লক্ষ্যবস্তু করেছিল। এই সব ঘাঁটিগুলি ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক সুবিধা বলে মনে করা হয়। মিশনের সময়, প্রতিটি বি-২ বিমানে দুজন পাইলট ছিলেন। মিসৌরির হোয়াইটম্যান এয়ারবেস (Whiteman Airbase) থেকে উড়ার পর এই বিমানগুলি মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরণের (refuelling) স্থানগুলিতে জ্বালানি পূর্ণ করে। এরপর, তারা ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড (US Central Command – CENTCOM) এর অধীনে সহায়তা প্যাকেজের সাথে সমন্বয় করে। এই সমন্বয় একটি সংকীর্ণ আকাশসীমায় হয়েছিল, যেখানে ন্যূনতম রেডিও যোগাযোগ সহ সঠিক সময় নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সবকিছু নীরবে এবং অত্যন্ত দ্রুততার সাথে করা হয়েছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *