বিনায়ক চতুর্থীতে এই জিনিসগুলি দিয়ে গণেশজিকে প্রসন্ন করুন, প্রতিটি মনোকামনা পূর্ণ হবে!

হিন্দুধর্মে ভগবান গণেশকে প্রথম পূজ্য দেবতা হিসাবে মানা হয়। যে কোনো শুভ কাজ শুরু করার আগে গণেশজির পূজা করার বিধান রয়েছে, যাতে কাজটি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। গণেশজিকে বিঘ্নহর্তা এবং বুদ্ধির দাতা হিসাবে পূজা করা হয়।
প্রতি মাসে যে চতুর্থী তিথি আসে, তা ভগবান গণেশকে উৎসর্গীকৃত, যা বিনায়ক চতুর্থী নামে পরিচিত। এই বছর ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার, আষাঢ় মাসের বিনায়ক চতুর্থীর পবিত্র ব্রত রাখা হবে। এই দিনটি ভগবান গণেশকে প্রসন্ন করে তাঁর কৃপা পাওয়ার জন্য অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। আপনিও যদি আপনার মনোকামনা পূরণ করতে এবং গণেশজির আশীর্বাদ পেতে চান, তাহলে আষাঢ় বিনায়ক চতুর্থীর দিন এই বিশেষ জিনিসগুলি দিয়ে তাঁর পূজা অবশ্যই করুন।
বিনায়ক চতুর্থীর দিনে গণেশজিকে প্রসন্ন করার জন্য এই জিনিসগুলি ব্যবহার করুন:
দুবো ঘাস (দूर्वा): গণেশজির দুবো ঘাস অত্যন্ত প্রিয়। শাস্ত্র অনুসারে, গণেশজিকে ২১টি দুবো ঘাসের গাঁট অর্পণ করা খুব শুভ বলে মনে করা হয়। এমনটা করলে গণেশজি প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের সমস্ত মনোকামনা পূর্ণ করেন। দুবো ঘাস অর্পণ করার সময় “ওঁ গং গণপতয়ে নমঃ” মন্ত্র জপ করা আবশ্যক।
মোদক বা লাড্ডু: গণেশজির মোদক এবং লাড্ডু খুব পছন্দ। বিনায়ক চতুর্থীর দিনে ভগবান গণেশকে মোদক বা বেসনের লাড্ডুর ভোগ অবশ্যই লাগান। মনে করা হয় যে এর ফলে গণেশজি অত্যন্ত প্রসন্ন হন এবং ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে।
লাল রঙের ফুল: গণেশজির লাল রঙের ফুল বিশেষভাবে পছন্দ, বিশেষ করে লাল জবা ফুল। বিনায়ক চতুর্থীর দিনে গণেশজিকে লাল জবা ফুল বা অন্য কোনো লাল রঙের ফুল অর্পণ করুন। এতে তিনি প্রসন্ন হন এবং আপনার প্রার্থনা গ্রহণ করেন।
শমী পাতা: শমী গাছ ভগবান শিব এবং গণেশ উভয়েরই প্রিয়। বিনায়ক চতুর্থীর দিনে গণেশজিকে শমীর পাতা অর্পণ করলে ঘরে ধন-ধান্যের বৃদ্ধি হয় এবং শনি দোষ থেকেও মুক্তি মেলে।
সিঁদুর: গণেশজির সিঁদুর খুব পছন্দ। তাঁর প্রতিমায় সিঁদুরের লেপন করা বা তাঁকে সিঁদুর অর্পণ করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এতে গণেশজি প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের বল ও বুদ্ধি প্রদান করেন।
কলা: গণেশজিকে কলাও অর্পণ করা হয়। সবসময় দুটি কলা একসঙ্গে অর্পণ করুন, কখনোও একা কলা অর্পণ করবেন না।
নারকেল: গণেশজির পূজায় নারকেলের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তাঁকে গোটা নারকেল অর্পণ করাও শুভ ফলদায়ী হয়।
পূজা পদ্ধতি:
বিনায়ক চতুর্থীর দিনে সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে স্নান করুন এবং পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করুন। এরপর পূজা স্থলে গণেশজির প্রতিমা বা ছবি স্থাপন করুন। গণেশজিকে রোলি, চন্দন, অক্ষত, দুবো ঘাস, মোদক, ফল, ফুল এবং ধূপ-দীপ অর্পণ করুন। গণেশ চালিশা এবং গণেশ স্তোত্র পাঠ করুন। সবশেষে গণেশজির আরতি করুন এবং তাঁর কাছে আপনার মনোকামনা পূরণের প্রার্থনা করুন। এই দিনে ব্রত পালনকারী ব্যক্তিরা সারাদিন ফলাহার করতে পারেন এবং সন্ধ্যায় চন্দ্রকে অর্ঘ্য দেওয়ার পর ব্রতের পারণ করতে পারেন।
বিনায়ক চতুর্থীর গুরুত্ব:
বিনায়ক চতুর্থীর ব্রত পালন করলে ভক্তরা সুখ, সমৃদ্ধি, শান্তি এবং সমস্ত বাধা থেকে মুক্তি পান। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে বিধি-বিধান সহকারে গণেশজির পূজা করলে তিনি শীঘ্র প্রসন্ন হন এবং ভক্তদের সমস্ত ইচ্ছা পূরণ করেন। বিশেষ করে আষাঢ় মাসের বিনায়ক চতুর্থীর নিজস্ব বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, কারণ এটি বর্ষা ঋতুর আগমনের ইঙ্গিতও দেয়।