ঘুম থেকে উঠলেই পুরুষদের এই স্থানে উত্তেজনা কেন? ‘বৈজ্ঞানিক’ কারণ জেনে আপনার ‘রূহ’ কেঁপে উঠবে, জানুন ‘পুরো সত্য’!

ঘুম থেকে উঠলেই পুরুষদের এই স্থানে উত্তেজনা কেন? ‘বৈজ্ঞানিক’ কারণ জেনে আপনার ‘রূহ’ কেঁপে উঠবে, জানুন ‘পুরো সত্য’!

মর্নিং ইরেকশন পুরুষদের মধ্যে একটি সাধারণ এবং জৈবিক প্রক্রিয়া, যা বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত ইঙ্গিত দেয়।

এই অবস্থা প্রায়শই ঘুমের বিশেষ পর্যায়গুলিতে ঘটে, যাকে আরইএম (REM) ঘুম বলা হয়।

মানসিক এবং হরমোনের ভারসাম্যও মর্নিং ইরেকশনকে প্রভাবিত করে।

এর সম্পর্ক শরীরে রক্ত ​​প্রবাহ এবং টেস্টোস্টেরন স্তরের সাথেও রয়েছে।

যদি দীর্ঘ সময় ধরে মর্নিং ইরেকশন না হয়, তবে এটি সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

মর্নিং ইরেকশন কী?
প্রতিটি সুস্থ পুরুষ তার জীবনে বহুবার এই অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন যে সকালে ঘুম থেকে উঠেই তারা তাদের লিঙ্গে দৃঢ়তা বা উত্তেজনা অনুভব করেন। চিকিৎসা পরিভাষায় এটিকে “নকটারনাল পেনাইল টিউমারসেন্স” (Nocturnal Penile Tumescence) বলা হয়, যখন সাধারণ ভাষায় এটিকে মর্নিং ইরেকশন বলা হয়।

এই অবস্থা যৌন উত্তেজনা বা কোনো স্বপ্নের কারণে হয় না, বরং এর পেছনে রয়েছে একাধিক বৈজ্ঞানিক এবং শারীরিক কারণ।

মর্নিং ইরেকশন কেন হয়?
ঘুমের পর্যায় এবং হরমোনের অবদান

আরইএম (REM) ঘুম এবং মর্নিং ইরেকশনের সম্পর্ক: যখন কোনো পুরুষ গভীর ঘুমে থাকে, বিশেষ করে আরইএম (Rapid Eye Movement) পর্যায়ে, তখন মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ ঘটে। এই সময় শরীরে নরঅ্যাড্রেনালিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রা কমে যায়, যা সাধারণত লিঙ্গকে শিথিল রাখতে সাহায্য করে। এই কমে যাওয়ার কারণে লিঙ্গে রক্ত ​​প্রবাহ দ্রুত হয় এবং মর্নিং ইরেকশন ঘটে।

টেস্টোস্টেরনের প্রভাব: সকালে শরীরে টেস্টোস্টেরন-এর মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে। এই হরমোনই লিঙ্গের উত্তেজনার জন্য প্রধানত দায়ী। তাই মর্নিং ইরেকশন প্রায়শই সকালের দিকে হয়।

মানসিক এবং শারীরিক ইঙ্গিত
এটি কি পুরুষের স্বাস্থ্যের লক্ষণ?

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত মর্নিং ইরেকশন হওয়া পুরুষদের ভালো রক্ত ​​প্রবাহ এবং হরমোনের ভারসাম্য-এর প্রতীক। এটি ইঙ্গিত করে যে পুরুষের প্রজননতন্ত্র এবং স্নায়ুতন্ত্র সুস্থভাবে কাজ করছে।

যদি কোনো ব্যক্তির ক্রমাগত মর্নিং ইরেকশন না হয়, তবে এটি কেবল যৌন স্বাস্থ্যের সমস্যার লক্ষণ নয়, বরং এটি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা মানসিক চাপের ইঙ্গিতও হতে পারে।

বয়সের সাথে পরিবর্তন
কৈশোর থেকে বৃদ্ধাবস্থা পর্যন্ত

মর্নিং ইরেকশন সাধারণত কৈশোর থেকেই শুরু হয়, যখন শরীরে টেস্টোস্টেরন উৎপাদন বাড়ে। তরুণ বয়সে এই প্রক্রিয়া সবচেয়ে নিয়মিত হয়, কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে হরমোনের মাত্রা কমতে থাকে এবং মর্নিং ইরেকশনের ফ্রিকোয়েন্সিও কমে যায়।

তবে, বৃদ্ধ পুরুষদের ক্ষেত্রেও সময়ে সময়ে এর উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে তাদের শারীরিক তন্ত্র এখনও সক্রিয় রয়েছে।

মর্নিং ইরেকশন কি যৌন ইচ্ছার ইঙ্গিত?
এটি একটি সাধারণ ভুল ধারণা যে মর্নিং ইরেকশনের অর্থ যৌন ইচ্ছা বা স্বপ্নদোষ। আসলে এটি শারীরিক প্রক্রিয়া, যা ঘুমের অবস্থায় শরীরের জৈবিক কার্যকলাপের ফলাফল। পুরুষ যে যৌন চিন্তা নিয়েই জাগবে, তা জরুরি নয়।

কখন এটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে?
ক্রমাগত অনুপস্থিতি বা অতিরিক্ত দৃঢ়তা

যদি কোনো পুরুষ দীর্ঘ সময় ধরে মর্নিং ইরেকশন অনুভব না করে, তবে এটি ইঙ্গিত দিতে পারে যে তার স্নায়ু বা হরমোন সিস্টেমে কোনো সমস্যা আছে। অন্যদিকে, যদি এই অবস্থা অতিরিক্ত ব্যথা বা দীর্ঘ সময় ধরে বজায় থাকে, তবে এটি ‘প্রিয়াPISM’ (Priapism)-এর মতো একটি অবস্থাও হতে পারে, যেখানে চিকিৎসার হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়।

সমাধান এবং যত্ন
জীবনযাত্রার পরিবর্তনে উন্নতি সম্ভব

ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্য এবং ব্যায়াম: ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমে মর্নিং ইরেকশনের গুণগত মান এবং নিয়মিততা উভয়ই উন্নত করা যায়।

পর্যাপ্ত ঘুম: ঘুমের গুণগত মান এবং সময়কালের সাথে মর্নিং ইরেকশনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম নেওয়া পুরুষদের মধ্যে এই অবস্থা আরও সাধারণভাবে দেখা যায়।

মর্নিং ইরেকশন একটি জৈবিক এবং স্বাস্থ্য-নির্দেশক প্রক্রিয়া, যা শরীরের একাধিক সিস্টেমের সমন্বয়ে উৎপন্ন হয়। এটি কেবল পুরুষদের প্রজনন স্বাস্থ্যেরই লক্ষণ নয়, বরং তাদের সামগ্রিক শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যেরও প্রতিচ্ছবি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *