পাকিস্তানে হিন্দু বোন ও ভাইয়ের জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করানো হল, আদালত বলল- ‘বাবা-মা…’

পাকিস্তানে হিন্দু বোন ও ভাইয়ের জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করানো হল, আদালত বলল- ‘বাবা-মা…’

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের শাহদাদপুর শহরে তিন হিন্দু বোন এবং তাদের এক চাচাতো ভাইকে কথিত অপহরণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরের ঘটনা সামনে এসেছে। পরিবারের সদস্যরা বলছেন যে, এই চারজন শিশুকে তাদের স্কুলেরই দুই শিক্ষক অপহরণ করে এবং তারপর তাদের ধর্ম পরিবর্তন করায়।

কিন্তু পাকিস্তানের অনেক মিডিয়া চ্যানেল বলছে যে, এই শিশুরা “নিজের ইচ্ছায়” ইসলাম গ্রহণ করেছে।

পরিবারের সদস্যদের মতে, ছেলেটির বয়স মাত্র ১৩ বছর এবং একটি মেয়ের বয়স ১৫ বছর। বাকি দুই মেয়ের বয়স ১৯ ও ২১ বছর, যারা মেডিকেলে পড়াশোনা করছে।

আদালতে পেশ করার পর কী ঘটল?
চারজনকেই উদ্ধার করার পর আদালতে পেশ করা হয়, যেখানে তারা জবানবন্দি দেন। আদালত বলেছেন যে, যে দুইজন শিশু নাবালক, তাদের বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হোক। বাকি দুই প্রাপ্তবয়স্ক বোনকে কোনো নিরাপদ স্থানে পাঠানো হোক, যাতে তারা ভেবেচিন্তে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে তারা কী করবে।

অভিযুক্ত শিক্ষক জামিনে মুক্তি পেলেন
যে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ ছিল, ফারহান খাসখেলি এবং জুলফিকার খাসখেলি, তাদের পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে কারণ তাদের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। দুজনেই জামিনও পেয়ে গেছেন। কিছু পাকিস্তানি চ্যানেল লিখেছে যে, “চার ভাই-বোন ইসলাম গ্রহণ করেছেন”, যেন তারা নিজেদের ইচ্ছায় তা করেছেন। আদালত বাবা-মাকে এও বলেছেন যে, তারা মেয়েদের সাথে ধর্ম সম্পর্কে কোনো কথা বলবেন না।

মানবাধিকার কমিশন ও সাংবাদিকদের ক্ষোভ
সিন্ধু মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনার নোটিশ নিয়েছে এবং এটিকে বেআইনি বলে অভিহিত করেছে। তারা সরকারের কাছে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। পাকিস্তানি সাংবাদিক উইঙ্গস জে প্রশ্ন তুলেছেন যে, যদি এই ঘটনা অন্য কোনো দেশে ঘটত, তাহলে পাকিস্তানের নেতারা এবং মিডিয়া এটিকে নিয়ে অনেক শোরগোল করত। কিন্তু যখন নিজের দেশের হিন্দু মেয়েদের কথা আসে, তখন সবাই চুপ। আরেক মানবাধিকার কর্মী ফারাজ পারভেজ বলেছেন যে, শিশুদের ইচ্ছাকৃতভাবে প্রাপ্তবয়স্ক দেখানো হয়েছে, আসল পরিচয়পত্র উপেক্ষা করা হয়েছে এবং ধর্ম পরিবর্তন করানো মৌলভীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পরিবারের অভিযোগ – জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করানো হয়েছে
ছেলে ও মেয়েদের পরিবার আদালতে এবং মিডিয়াতেও স্পষ্টভাবে বলেছে যে, এই সবই জোর করে হয়েছে। প্রথমে অপহরণ করা হয়েছে এবং তারপর ইসলাম গ্রহণ করানো হয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে সিন্ধুর অনেক অংশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে এবং তারা পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *