ইউক্রেন দাবি করেছে যে তারা রাশিয়ার অত্যাধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা S-400 ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে। S-400 হলো আকাশপথে হামলা প্রতিরোধের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরঞ্জাম, যা ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশ রাশিয়া থেকে সংগ্রহ করেছে। অতীতে, ‘অপারেশন সিন্দূর’-এর সময় এই S-400 পাকিস্তানের আক্রমণ সফলভাবে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছিল। তবে, ইউক্রেনের এই দাবি ভারতসহ যেসব দেশের কাছে এই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

দ্য কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা এইচইউআর (HUR) জানিয়েছে যে ইউক্রেনীয় ড্রোনগুলো রাশিয়ার অধিকৃত ক্রিমিয়ায় বিমান প্রতিরক্ষা সরঞ্জামগুলিতে হামলা চালিয়েছে, যার ফলে রাডার ইউনিটগুলি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং S-400 প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপাদানগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এইচইউআর তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে হামলার ভিডিও ফুটেজও পোস্ট করেছে। এইচইউআর দাবি করেছে, ড্রোন হামলায় দুটি 91N6E বিগ বার্ড রাডার এবং S-400 এর লঞ্চারও ধ্বংস হয়েছে। 91N6E বিগ বার্ডকে S-400-এর মেরুদণ্ড বলে মনে করা হয়, যা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে স্টিলথ বিমান পর্যন্ত সকল প্রকার আকাশপথের হুমকি শনাক্ত করতে সক্ষম।

ভারতের S-400 চুক্তি এবং ভবিষ্যৎ উদ্বেগ
সম্প্রতি, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে S-400 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা করেছে। সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলনের ফাঁকে ২৬-২৭ জুন চীনের কিংদাও-তে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রে বেলোসভের সাথে দেখা করেন। এই বৈঠকে S-400 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সরবরাহ, SU-30 MKI-এর আপগ্রেডেশন এবং অন্যান্য অস্ত্র কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়।

২০১৮ সালে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে S-400 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জন্য প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতকে পাঁচটি S-400 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহে বিলম্ব হয়। বর্তমানে ভারতের কাছে তিনটি S-400 স্কোয়াড্রন রয়েছে, যা পাকিস্তান ও চীনের হুমকি মোকাবেলার জন্য উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্বাঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়া সেনাবাহিনীর একজন সিনিয়র কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে ২০২৭ সালের মধ্যে আরও দুটি S-400 স্কোয়াড্রন সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন, যার মধ্যে একটি ২০২৬ সালের মধ্যে এবং অন্যটি ২০২৭ সালের মধ্যে ভারতে পৌঁছাবে। ইউক্রেনের এই দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে S-400 এর কার্যকারিতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রশ্ন উঠতে পারে এবং ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলেও এর প্রভাব পড়তে পারে।