সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করল ভারত, পাকিস্তানকে কড়া জবাব!

সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করল ভারত, পাকিস্তানকে কড়া জবাব!

ভারত আজ ১৯৫০ সালের সিন্ধু জল চুক্তির বিষয়ে তথাকথিত মধ্যস্থতা আদালতের দাবি ও উদ্বেগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এই অবৈধ সালিসি আদালতকে কোনোদিনই স্বীকৃতি দেয়নি। হেগের স্থায়ী সালিসি আদালতের (Permanent Court of Arbitration – PCA) এই সিদ্ধান্তকে ভারত সরকার স্পষ্টভাবে বাতিল করে দিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের কিষাণগঙ্গা ও রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে পাকিস্তানের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া আদালতের সিদ্ধান্তকে ভারত “তথাকথিত সম্পূরক সিদ্ধান্ত” বলে আখ্যায়িত করেছে।

ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রক এক পাঁচ দফা বিবৃতিতে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, দিল্লি এই স্বঘোষিত মধ্যস্থতাকারীকে ভারতের কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার দেয়নি। ভারতের অবস্থান প্রথম থেকেই স্পষ্ট ছিল যে, এই তথাকথিত মধ্যস্থতাকারী সংস্থাটির গঠন সিন্ধু জল চুক্তিরই গুরুতর লঙ্ঘন। এর ফলস্বরূপ, এই ফোরামের যে কোনো কার্যকলাপ এবং এর নেওয়া যেকোনো সিদ্ধান্ত একই কারণে অবৈধ ও অকার্যকর।

পাকিস্তানকে ভারতের কড়া জবাব এবং সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ
বিদেশ মন্ত্রক সরাসরি পাকিস্তানকে ভারতে হওয়া সন্ত্রাসী হামলার জন্য দায়ী করে জানিয়েছে যে, পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে তার অধিকার প্রয়োগ করে সিন্ধু জল চুক্তিকে স্থগিত করেছে। যতদিন পাকিস্তান সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থন বিশ্বাসযোগ্য ও অপরিবর্তনীয়ভাবে ত্যাগ না করবে, ততদিন এই চুক্তি স্থগিত থাকবে। ভারত জানিয়েছে, যতক্ষণ চুক্তি স্থগিত থাকবে, ততক্ষণ ভারত তার কোনো বাধ্যবাধকতা পূরণে বাধ্য নয়।

ভারত এই ‘তথাকথিত মধ্যস্থতা আদালত’-এর কঠোর সমালোচনা করে বলেছে যে, এটি পাকিস্তানের ইশারায় কাজ করছে এবং এর আইনগত কোনো অস্তিত্ব নেই। ভারত পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক কেন্দ্র আখ্যা দিয়ে জোর দিয়েছে যে, “পাকিস্তানের ইশারায় এই নতুন নাটকটি বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্র হিসেবে তার ভূমিকা থেকে দায় এড়ানোর আরেকটি মরিয়া চেষ্টা।” ভারত আরও স্পষ্ট করে বলেছে যে, সিন্ধু জল চুক্তি ততদিন স্থগিত থাকবে, যতদিন না পাকিস্তান সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও অর্থায়নের সব চিহ্ন এবং তাদের মাটিতে থাকা প্রতিটি সন্ত্রাসীকে নির্মূল করছে। ভারত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, ভারতে যেকোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক পাওয়া গেলে, সেটিকে সন্ত্রাসবাদ হিসাবে গণ্য করা হবে এবং ভারত পাকিস্তানের যেকোনো স্থানে সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “রক্ত ও জল একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।” ভারত পাকিস্তানকে বারবার জানিয়েছে যে, “সন্ত্রাসবাদ এবং আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না,” যা ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিকে (পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দফতর) চুক্তি অনুযায়ী জলের নিজেদের অংশ পেতে হলে “সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ” নীতি বন্ধ করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প রাখেনি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *