কঠিন সময়ে পাকিস্তানকে ধোঁকা দিল ইরান! কীভাবে ভারত রক্ষা করল চাবাহার বন্দরকে?

কঠিন সময়ে পাকিস্তানকে ধোঁকা দিল ইরান! কীভাবে ভারত রক্ষা করল চাবাহার বন্দরকে?

মধ্যপ্রাচ্যে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এই যুদ্ধে উভয় দেশ একে অপরের ওপর শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার ফলে ডজনখানেক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এই সংঘাতে আমেরিকার সরাসরি অংশগ্রহণ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কাও তৈরি করেছিল। ইসরায়েল ও আমেরিকা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে, যার ফলে ইরানও ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে। তবে, ইরানের এই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও চাবাহার বন্দর অক্ষত ছিল, এবং এতে ভারতের একটি বড় ভূমিকা ছিল।

ইরানের চাবাহার বন্দর দেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক পথ হওয়া সত্ত্বেও, এটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ছিল। ভয়াবহ যুদ্ধের পরিস্থিতিতে যখন বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছিল এবং প্রধান রুটগুলোতে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছিল, তখন চাবাহার বন্দর স্বাভাবিকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। ভারত শুধু চাবাহারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেনি, বরং ইরানের সহযোগিতায় ইসরায়েলের হাইফা বন্দরেও কোনো আঁচ আসতে দেয়নি।

ভারতের ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি ও চাবাহার বন্দরের সুরক্ষা
যুদ্ধ চলাকালীন ভারত সরকারের অবস্থান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত ১৩ জুন সংঘাত শুরু হওয়ার পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এর ঠিক পরেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে আলোচনা করেন। ভারত ইরানকে এমন কোনো পরিস্থিতি এড়াতে অনুরোধ করেছিল যা সংঘাতকে আরও উসকে দিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মোদী ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেশেশকিয়ানকেও ফোন করে উত্তেজনা কমানোর পক্ষে সওয়াল করেন। এভাবে ভারত উভয় পক্ষের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখে এবং ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চাবাহার বন্দরের কোনো ক্ষতি হয়নি।

আকর্ষণীয় বিষয় হলো, ভারতের পরিচালিত চাবাহার বন্দর থেকে মাত্র ১৭০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর ইরানে না থেকেও যুদ্ধের প্রভাব অনুভব করছিল। যুদ্ধের সময় পাকিস্তান ১৫ জুন থেকে ইরান সংলগ্ন গাবদ-রিমদান সহ বেলুচিস্তানে ইরানের সঙ্গে সমস্ত সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছিল। এর ফলে গোয়াদর বন্দর কয়েক দিনের মধ্যেই হুমকির মুখে পড়তে পারত, তবে চাবাহার বন্দর এসব থেকে অক্ষত ছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *