ইসরায়েল যুদ্ধের পর এবার তালিবানকে ‘হিসেব নিতে’ শুরু করল ইরান!

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এবার ইরান তালিবান-শাসিত আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ইরান প্রশাসন একদিকে যেমন আফগান অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠাচ্ছে, তেমনই তেহরানে আফগানিস্তান থেকে আসা বহু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ হয়েও তালিবানের কাছ থেকে কোনো সাহায্য না পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তেহরান এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিবিসি পার্সিয়ানের খবর অনুযায়ী, তেহরান প্রশাসন মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাঁচজন আফগানকে গ্রেপ্তার করেছে। তালিবানের মুখপাত্র মুজাবিদ এই বিষয়ে বলেছেন যে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। এছাড়া, তোলো নিউজের খবর অনুযায়ী, তেহরান আফগানিস্তানের নাগরিকদের গ্রেপ্তার করা চার গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। নিয়মের লঙ্ঘনের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, যারা সবাই শরণার্থী হিসেবে ইরানে গিয়েছিল। হেরাৎ প্রদেশের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে তোলো নিউজ জানিয়েছে যে, তেহরানের এই কড়া পদক্ষেপের কারণে একদিনেই প্রায় ৩০ হাজার আফগান তাদের দেশে ফিরে গেছেন। তেহরানে প্রায় ২ লক্ষ আফগানির উপস্থিতি রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের যুদ্ধে তালিবানের নীরবতা
তালিবান-শাসিত আফগানিস্তান ইরানের প্রতিবেশী দেশ। ইরান ও আফগানিস্তানের ৯২১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা পাকিস্তানের চেয়ে প্রায় ১১ কিলোমিটার বেশি। ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে তালিবান ইরানের পাশে প্রকাশ্যে দাঁড়ায়নি। তালিবান তুরস্কের মতো ইরানের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়নি, এমনকি ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমর্থনও জানায়নি। শুধু তাই নয়, ইরানের বেশ কয়েকজন সামরিক কমান্ডার তালিবানের কাছে আশ্রয় চেয়েও কোনো সাহায্য পাননি।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের খবর অনুযায়ী, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের কর্মকর্তারা যখন তালিবানের কাছে নিরাপদ আশ্রয় চেয়েছিলেন, তখন তালিবানের কর্মকর্তারা মিটিং করে এই খবর ফাঁস করে দিয়েছিলেন। এই বিশ্বাসঘাতকতাই এখন ইরানকে তালিবানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।