ইরানকে ফাঁসানোর ট্রাম্পের ‘বিপজ্জনক’ চাল, কিন্তু ভারত ‘আসল খেলোয়াড়’ হয়ে রাশিয়াকে নিয়ে বাজিমাত করল!

আমেরিকার যুদ্ধ ইসরায়েল-ইরান সংঘাতকে আরও উসকে দিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প জানতেন যে, মার্কিন সেনাবাহিনী যেই ইরানে হামলা করবে, ইরান সরকার একটি বড় পদক্ষেপ নেবে। ইরান সেই বড় পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে। মজার বিষয় হলো, আমেরিকার কারণে ইরান সরকার যে পদক্ষেপ নিতে চলেছে, তার খারাপ প্রভাব আমেরিকার ওপর নয়, বরং ভারত, চীন এবং জাপানের মতো দেশগুলির ওপর পড়তে পারে। কিন্তু ভারত এর আগেই একটি বড় চাল চেলেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার চালাক মস্তিষ্ক ব্যবহার করেছেন বটে, কিন্তু ট্রাম্প যা ভাবেন, ভারত তার থেকে ১০ ধাপ এগিয়ে চিন্তা করে। প্রধানমন্ত্রী মোদী রাশিয়ার সঙ্গে এমন একটি চুক্তি আগেই করে রেখেছেন, যা পুরো খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।
ইরানের পাল্টা পদক্ষেপ এবং তার প্রভাব
ইসরায়েল সংঘাতে আমেরিকার প্রবেশের পর ইরান সতর্ক করে দিয়েছে যে, তারা পারস্য উপসাগরকে আরব সাগরের সঙ্গে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ তেল করিডোর, হরমোজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে। ইরানের পার্লামেন্টে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। তবে, এই সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল। আমেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো ৩৩ কিলোমিটার চওড়া হরমোজ সমুদ্র করিডোর। বিশ্বের ২৬% অপরিশোধিত তেল সরবরাহ এই পথেই হয়। ইরান যদি এখানে মার্কিন ট্যাংকারগুলোকে নিশানা করে, তাহলে এটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে। এর ফলে তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা থাকবে।
গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের অজয় শ্রীবাস্তব বলেছেন যে, ভারত তার অপরিশোধিত তেলের দুই-তৃতীয়াংশ এবং প্রায় অর্ধেক এলএনজি (LNG) হরমোজ করিডোর দিয়েই আমদানি করে। লোহিত সাগরে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে, যা ভারত থেকে পশ্চিমা দেশগুলিতে রপ্তানিকে প্রভাবিত করবে। যদি জাহাজগুলোকে কেপ অফ গুড হোপের পথ ধরে ঘুরিয়ে নিতে হয়, তাহলে ডেলিভারি দুই সপ্তাহ দেরিতে হবে এবং ভারতীয় রপ্তানিকারকদের খরচ বাড়বে।
ভারতের মাস্টারস্ট্রোক: রাশিয়ার সঙ্গে বড় প্রস্তুতি
ভারত জুনের শুরু থেকেই রাশিয়া থেকে এত বেশি তেল কেনা শুরু করেছে, যা সৌদি আরব এবং ইরাক উভয়কে একত্রিত করে কেনার সমান। ভারত আগেই জানত যে, ইরান, ইসরায়েল এবং আমেরিকা একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াবে। এই পরিস্থিতিতে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে আগেই একটি বড় তেল কেনার চুক্তি করে ফেলেছিল। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ পুরী বলেছেন যে, “গত কয়েক বছরে আমরা সরবরাহ উৎসগুলিতে বৈচিত্র্য এনেছি। আমাদের তেল কো ম্পা নিগুলির কাছে কয়েক সপ্তাহের জন্য পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।”