শেফালী জাভেরিয়ার মৃত্যু: ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রহস্য কাটছে না!

শেফালী জাভেরিয়ার মৃত্যু: ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রহস্য কাটছে না!

‘কাঁটা লাগা’ খ্যাত বলিউড অভিনেত্রী শেফালী জাভেরিয়া শুক্রবার গভীর রাতে মারা গেছেন। তার আকস্মিক মৃত্যুতে শুধু ভক্তরাই নন, গোটা বিনোদন জগতও হতবাক। শেফালীর মৃত্যুর পর থেকেই তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, শেফালীর মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক। তবে, এখন জানা গেছে যে, গভীর রাত ১টায় পুলিশ এবং ফরেনসিক টিম শেফালীর বাড়িতে পৌঁছেছে। বাড়িতে উপস্থিত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে, গভীর রাতে তার রাঁধুনি এবং পরিচারিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিয়ে গেছে। শেফালীর মৃত্যু নিয়ে এখনও রহস্য বিদ্যমান। এটি এখনও স্পষ্ট নয় যে মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাকই ছিল। পুলিশ জানিয়েছে যে, পোস্টমর্টেম রিপোর্টের পরেই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

গত ১২ ঘণ্টায় যা যা ঘটেছে
শেফালীর মৃত্যুর পর গত ১২ ঘণ্টায় তার মৃত্যু এবং স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ কিছু তথ্য সামনে এসেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক গত ১২ ঘণ্টায় কী কী ঘটেছে:

শুক্রবার গভীর রাতে শেফালী জাভেরিয়া মারা যান।

অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর মুম্বাই পুলিশের একটি দল এবং ফরেনসিক টিম শেফালী জাভেরিয়ার বাড়িতে পৌঁছায়।

শেফালীর বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক (ওয়াচম্যান) মৃত্যুর পরের ঘটনা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান, রাত প্রায় ১০:৩০ টায় শেফালীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তার আগে রাত ৯টায় তার স্বামী পরাগ ত্যাগী মোটরসাইকেলে সোসাইটিতে এসেছিলেন।

ওয়াচম্যান আরও জানান, গত পরশু সন্ধ্যায় ম্যাডাম এবং স্বামী পরাগকে তাদের কুকুরের সঙ্গে সোসাইটির প্রাঙ্গণে দেখা গিয়েছিল।

পুলিশ রাত থেকেই বাড়ির ভেতরে উপস্থিত ছিল। মোবাইল ফরেনসিক ইউনিটের দুটি গাড়িও ঘটনাস্থলে ছিল।

তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর একজন ব্যক্তি মোটরসাইকেলে আসেন, যিনি তার বন্ধু বলে মনে হচ্ছিল এবং এরপর জানানো হয় যে শেফালী আর নেই।

বর্তমানে শেফালী জাভেরিয়ার পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।

রাঁধুনি ও পরিচারিকাকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ
শেফালীর মৃত্যু হয় শুক্রবার গভীর রাতে। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। রাত ১টায় মুম্বাই পুলিশ এবং ফরেনসিক টিম শেফালীর বাড়িতে পৌঁছায়। দলটি বাড়ির ভেতরে উপস্থিত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তদন্ত শুরু করে। বাড়ির সদস্যদের পাশাপাশি বাড়িতে কাজ করা কর্মীদেরও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রাঁধুনি এবং পরিচারিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আম্বোলি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

শেফালীর স্বাস্থ্য নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য
শেফালীর মৃত্যুর পর থেকে তার স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক তথ্য সামনে আসছে। ৪২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী, যিনি দেখতে ফিট ছিলেন, গত কয়েকদিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং ওষুধ সেবন করছিলেন। শেফালী প্রায় ১৫ বছর ধরে মৃগী রোগে ভুগছিলেন। অভিনেত্রী একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, স্কুল জীবন থেকেই তার খিঁচুনি হতো।

শেফালী জাভেরিয়া তার একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, স্কুল জীবনে ক্লাসে, স্টেজের পেছনে বা রাস্তায় তার খিঁচুনি হতো, যার কারণে তার আত্মবিশ্বাস কমে যেত।

অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট এবং ডাক্তারের দাবি
শেফালীর মৃত্যুর পর জানা গেছে যে, তিনি গত ৫-৬ বছর ধরে অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট নিচ্ছিলেন। শেফালীর চিকিৎসা করা ডাক্তার জানিয়েছেন যে, শেফালী অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট নিচ্ছিলেন, যার অর্থ ‘তরুণ দেখানোর জন্য চিকিৎসা’। শেফালী দুটি ওষুধ সেবন করছিলেন: ভিটামিন সি এবং গ্লুটাথিয়ন (Glutathione) নামের ওষুধ।

তবে, ডাক্তার দাবি করেছেন যে, এই ওষুধগুলির হৃদপিণ্ডের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই; এই ওষুধগুলি ত্বকের উজ্জ্বলতার জন্য নেওয়া হয় এবং এর প্রভাব শুধুমাত্র ত্বকের উপরই হয়।

পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা
শেফালীর মরদেহ বর্তমানে মুম্বাইয়ের কাপুর হাসপাতালে রয়েছে, যেখানে পোস্টমর্টেম করা হচ্ছে। সবাই শেফালীর পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন। এই রিপোর্ট থেকেই অনেক বড় তথ্য উন্মোচিত হবে এবং শেফালীর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

শেফালীর মৃত্যুর পর পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। চলচ্চিত্র নির্মাতা অশোক পণ্ডিত দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন যে, শেফালীর ক্যারিয়ার খুব ভালো চলছিল। তবে, তিনি যে রোগে ভুগছিলেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি আরও বলেছেন যে, এমন ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে, মানুষের উপর কাজের চাপ বাড়ছে এবং তারা হতাশায় ভুগছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *