আর্কটিক অঞ্চলের বরফ নিয়ে সবসময়ই আলোচনা হয়। এমন পরিস্থিতিতে ডেনমার্কের নেতৃত্বে একটি নতুন গবেষণা প্রকল্প আইসলার্ট (ICELERT) শুরু করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করা যা আগে থেকেই বলে দিতে পারবে যে, আর্কটিক অঞ্চলে কখন গ্রীষ্মকালে বরফ সম্পূর্ণরূপে গলে যাবে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, এই পরিস্থিতি ২০৩০-এর দশকেও আসতে পারে। ডেনিশ আবহাওয়া বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট (Danish Meteorological Institute – DMI)-এর নেতৃত্বে এই প্রকল্পটি ২০৩১ সাল পর্যন্ত চলবে। এর লক্ষ্য হলো সময়মতো সতর্ক করা যে, যখন আর্কটিকে বরফ থাকবে না, তখন বিশ্বের আবহাওয়া, পরিবেশ এবং মৎস্য চাষের উপর এর কী প্রভাব পড়বে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এর ফলে ভয়াবহ গরম বাতাস, আরও তীব্র ঝড় এবং আবহাওয়ায় বড় ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখা যেতে পারে। ডিএমআই-এর ন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট রিসার্চের প্রজেক্ট লিডার তিয়ান বলেছেন, “আর্কটিকে বরফের অনুপস্থিতি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে, যা বৈশ্বিক তাপমাত্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির আগেই ঘটতে পারে।” তিয়ান এই কথা জোর দিয়ে বলেছেন যে, আর্কটিক সামুদ্রিক বরফ পৃথিবীর জলবায়ু সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এর বিলুপ্তি মেরু অঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।

নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার এবং পূর্বাভাস
এই আইসলার্ট প্রকল্পে ডেনমার্কের আবহাওয়া সংস্থা, ডেনমার্কের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি এবং বেলজিয়ামের রয়্যাল মেটরিওলজিক্যাল ইনস্টিটিউট (Royal Meteorological Institute)-এর প্রধান বিশেষজ্ঞরা একসঙ্গে কাজ করছেন। তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স – AI), আধুনিক আবহাওয়া মডেল এবং অন্যান্য প্রযুক্তির সাহায্যে আর্কটিকে বরফ বিলুপ্তির পরিস্থিতির জন্য ছোট এবং দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস তৈরি করবে। প্রথম পূর্বাভাস ২০২৮ সালের মধ্যে জারি হওয়ার আশা করা হচ্ছে। ডেনমার্কের আবহাওয়া সংস্থা ইতিমধ্যেই আর্কটিক অঞ্চলের আবহাওয়া, সমুদ্র, বরফ এবং ঢেউয়ের পূর্বাভাস তৈরি করে, বিশেষ করে গ্রিনল্যান্ডের জন্য। এছাড়াও ডিএমআই আর্কটিকে অনেক জলবায়ু গবেষণায় অংশ নেয়, যার মধ্যে বায়ুমণ্ডল এবং বরফ স্তরের অধ্যয়ন এবং গ্রিনল্যান্ডের চারপাশের সমুদ্রে বরফের বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত।