‘সন্তদের কাছ থেকে আমরা যা পাই তা হল প্রসাদ…’, ‘ধর্ম চক্রবর্তী’ পুরস্কার গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন

‘সন্তদের কাছ থেকে আমরা যা পাই তা হল প্রসাদ…’, ‘ধর্ম চক্রবর্তী’ পুরস্কার গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন

আচার্য শ্রী ১০৮ বিদ্যানন্দ জি মহারাজের জন্ম শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘ধর্ম চক্রবর্তী’ উপাধিতে সম্মানিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এই অনুষ্ঠানে ডাকটিকিট এবং মুদ্রা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সরকার প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলোকে ডিজিটালাইজ করছে। মাতৃভাষায় নতুন পাঠ্যক্রমও শুরু করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, আমি লালকেল্লা থেকে বলেছিলাম, আমাদের দেশকে দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত করতে হবে। এই ভাবনা থেকেই আমরা ‘বিকাশ ভি, ভিরাসাত ভি’ (উন্নয়নও, ঐতিহ্যও) মন্ত্রে কাজ করছি।

‘আমাদের সংস্কার হল সাধুদের কাছ থেকে…’

তিনি আরও বলেন, আজ এই অনুষ্ঠানে আপনারা আমাকে ‘ধর্ম চক্রবর্তী’ উপাধি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি নিজেকে এর যোগ্য মনে করি না। কিন্তু আমাদের সংস্কার হলো, সাধুদের কাছ থেকে যা কিছু পাওয়া যায়, তা প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তাই আমি আপনাদের এই প্রসাদ বিনম্রভাবে গ্রহণ করছি এবং তা ভারতমাতার চরণে অর্পণ করছি।

‘আজকের দিনটি বিশেষ…’

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, আজকের এই দিনটি আরও একটি কারণে খুব বিশেষ। ২৮ জুন অর্থাৎ, ১৯৮৭ সালে এই তারিখে আচার্য বিদ্যানন্দ জি মুনিরাজ আচার্য পদ লাভ করেছিলেন। এটি শুধু একটি সম্মান ছিল না, বরং জৈন প্রথাকে চিন্তা, সংযম এবং করুণার সঙ্গে যুক্ত করার একটি পবিত্র ধারা প্রবাহিত হয়েছিল। আজ যখন আমরা তাঁর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করছি, তখন এই তারিখটি আমাদের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই উপলক্ষে আমি আচার্য বিদ্যানন্দ জি মুনিরাজের চরণে প্রণাম জানাই এবং প্রার্থনা করি তাঁর আশীর্বাদ আমাদের সকলের উপর যেন থাকে।

‘ভারত সবচেয়ে প্রাচীন জীবন্ত সভ্যতা’

তিনি বলেন, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন জীবন্ত সভ্যতা এবং এর কারণ হলো আমাদের সাধু ও ঋষিদের অমর চিন্তা ও দর্শন। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন জীবন্ত সভ্যতা। আমরা হাজার হাজার বছর ধরে অমর, কারণ আমাদের চিন্তা অমর, আমাদের দর্শন অমর। আর এই দর্শনের উৎস হলেন আমাদের ঋষি-মুনি, মহর্ষি, সাধু এবং আচার্যরা। আচার্য বিদ্যানন্দ জি মুনিরাজ ভারতের এই ঐতিহ্যের আধুনিক আলোকস্তম্ভ।

তিনি আরও বলেন, যখন হাজার হাজার বছর ধরে বিশ্বে সহিংসতাকে সহিংসতা দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা চলছিল, তখন ভারত বিশ্বকে অহিংসার শক্তির কথা জানিয়েছিল। আমরা মানবতার সেবাকে সবার উপরে স্থান দিয়েছি। সবাই একসঙ্গে চলি, আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাই— এটাই আমাদের সংকল্প।

প্রধানমন্ত্রী মোদী নবকার মহামন্ত্র দিবস স্মরণ করেন এবং বলেন যে সেদিন আমরা দেশবাসীকে ৯টি সংকল্প নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। আমি খুশি যে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই সংকল্পগুলো পালন করছেন। আচার্য শ্রী বিদ্যানন্দ জি মহারাজের দিকনির্দেশনা এই সংকল্পকে আরও শক্তি দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন বিশ্ব সহিংসতাকে সহিংসতা দিয়ে থামানোর চেষ্টা করেছিল, তখন ভারত অহিংসার শক্তি দিয়ে বিশ্বকে নতুন পথ দেখায়। তিনি আবারও বলেন যে সরকার দেশকে ‘দাসত্বের মানসিকতা’ থেকে মুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ৯টি সংকল্প পুনরায় উল্লেখ করেন এবং মানুষকে সেগুলো পালনের আবেদন জানান। এই ৯টি সংকল্প হলো:

জল সংরক্ষণ

মায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি গাছ লাগানো

পরিচ্ছন্নতা

স্থানীয় পণ্য গ্রহণ করা (ভোকাল ফর লোকাল)

দেশের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করা

প্রাকৃতিক কৃষি গ্রহণ করা

স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা গ্রহণ করা

খেলাধুলা এবং যোগাসন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করা

গরিবদের সাহায্য করা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *