পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের উপর দিয়ে কেন ওড়ে না পাখি, কী এর কারণ?

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে অনেক রহস্য জড়িয়ে আছে, এবং এর মধ্যে সবচেয়ে অনন্য রহস্য হলো এর উপর দিয়ে কোনো পাখি বা বিমান ওড়ে না। এই ঘটনা নিয়ে ধর্মীয় এবং বৈজ্ঞানিক—উভয় ধরনের ব্যাখ্যাই প্রচলিত আছে।
এটি এমন একটি রহস্য যা ভক্ত এবং বিজ্ঞানী উভয়কেই বিস্মিত করে।
সবচেয়ে প্রচলিত ধর্মীয় বিশ্বাস হলো, ভগবান জগন্নাথ (যিনি ভগবান বিষ্ণুর অবতার) এর বাহন গরুড় দেব, যিনি পক্ষীকুল-এরও রাজা, স্বয়ং এই মন্দির রক্ষা করেন। এমনটা মনে করা হয় যে যখন পক্ষীদের রাজা নিজে মন্দিরের সুরক্ষা করছেন, তখন অন্য পাখিরা তাঁর সম্মানে বা ভয়ে মন্দিরের উপর দিয়ে উড়ে যায় না।
ভক্তদের বিশ্বাস, এটি একটি ঐশ্বরিক শক্তি বা অলৌকিক ঘটনা যা ভগবান জগন্নাথের মহিমাকে তুলে ধরে। মন্দির এবং এর চারপাশের এলাকা একটি ‘নো-ফ্লাই জোন’ যা ঐশ্বরিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। পুরী একটি উপকূলীয় অঞ্চল এবং জগন্নাথ মন্দির সমুদ্রের খুব কাছে অবস্থিত। এই এলাকায় প্রায়শই তীব্র বাতাস প্রবাহিত হয়।
বিশেষ করে মন্দিরের ২১৪ ফুট উঁচু কাঠামোর চারপাশে। বিজ্ঞানীদের মতে, মন্দিরের উচ্চতা এবং এর বিশাল বা বেলনাকার কাঠামোর কারণে এর উপরে বাতাসের প্রবাহ এত তীব্র ও জটিল (যেমন ‘কারম্যান ভর্টেক্স স্ট্রিট’ এর ঘটনা) হতে পারে যে পাখিদের পক্ষে এত উচ্চতায় ভারসাম্য বজায় রাখা এবং ওড়া কঠিন হয়ে যায়।
বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে বলা হয় যে পুরী শহর কোনো নিয়মিত বিমান চলাচলের পথে পড়ে না, তাই বিমানগুলোর সেখান দিয়ে ওড়ার কোনো কারণ নেই। এছাড়াও, মন্দিরের শিখরে স্থাপিত নীলচক্র, যা আটটি ধাতু দিয়ে তৈরি, সে সম্পর্কে কিছু লোকের বিশ্বাস যে এটি বেতার যোগাযোগে হস্তক্ষেপ করতে পারে, যা বিমানের জন্য বিপদজনক হতে পারে, যদিও এটি একটি গুজবের বেশি কিছু নয়।