প্রতি ঘণ্টায় ১৫ বার বমি: বছরের পর বছর ভুল চিকিৎসা, আসল রোগ জানলে চমকে যাবেন

সাধারণত কোনও রোগকেই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। তবে কিছু রোগ আছে, যা আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মনে হলেও এর পরিণতি অত্যন্ত গুরুতর হতে পারে। এমনই একটি রোগ হলো সিভিসি অর্থাৎ ‘সাইক্লিক ভমিটিং সিন্ড্রোম’।
এই রোগে নারী ও মাইগ্রেন আক্রান্তদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশ্বজুড়ে মাত্র ২ শতাংশ মানুষ এই রোগে ভোগেন।
আমেরিকার বাসিন্দা শ্যারিস জিরুনিয়ান এই রোগে আক্রান্ত। তিনি জানান, এই রোগে এক ঘণ্টায় ১৫ বারের বেশি বমি হয়। চিকিৎসকরা প্রথমে ভেবেছিলেন এটি মানসিক চাপ বা মাইগ্রেনের কারণে হচ্ছে। এমনকি অনেক চিকিৎসক তাঁকে বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের রোগী বলেও ধরে নেন।
প্রতি ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ বার বমি
এই নারী জানান, তিনি বছরের পর বছর ধরে এই বিরল রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন। তিনি বলেন, এই রোগে প্রতি ঘণ্টায় ১৫ বারের মতো বমি হয়। ২৯ বছর বয়সী শ্যারিস জিরুনিয়ান মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা পিরিয়ডের আগে বমি এবং খিঁচুনির শিকার হতেন। তিনি জানান, প্রথমে চিকিৎসকরা এটিকে মাইগ্রেন মনে করে ভুল চিকিৎসা করেন। এতে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। যার কারণে তাঁকে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
রোগের কারণে চাকরিও হারাতে হয়েছে
শ্যারিস বলেন, বারবার বমির কারণে আমাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন এবং তাঁর ওজনও কমে গিয়েছিল। তিনি জানান, এই সময়ে তিনি আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন। তিনি বলেন, “এরপর দুই বছর পর অর্থাৎ ২০২৩ সালে আমি আমার আসল রোগ ‘সাইক্লিক ভমিটিং সিন্ড্রোম’ (সিভিএস) সম্পর্কে জানতে পারি। এটি একটি বিরল রোগ, যা বিশ্বজুড়ে প্রায় ২ শতাংশ মানুষকে প্রভাবিত করে। এই রোগটি বিশেষত নারী এবং মাইগ্রেন আক্রান্তদের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।”
শ্যারিস আরও জানান, এখনও প্রতি সপ্তাহে তাঁর খিঁচুনি হয়, তবে বমি-বিরোধী এবং অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ ব্যবহারের ফলে খিঁচুনির পরিমাণ কমেছে। তিনি বলেন, গুরুতর পরিস্থিতিতে তিনি কেবল ভিটামিনযুক্ত জল পান করতে পারেন। বমি এবং খিঁচুনি এড়াতে তিনি জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া এড়িয়ে চলেন।
পরিচালনা করছেন সিনেমা
এত গুরুতর অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি কখনও হাল ছাড়েননি। শ্যারিস জিরুনিয়ান ‘নাথিং সলিড’ নামে একটি কমেডি ছবি লিখেছেন এবং পরিচালনাও করেছেন। তিনি এই ছবিটিকে ‘ভম-কম’ বলে অভিহিত করেছেন। শ্যারিসের পরিচালিত এই ছবিটি আগস্ট মাসে মুক্তি পাবে। ছবিটি এই ধরনের রোগে আক্রান্ত মানুষদের সাহস জোগানোর ওপর ভিত্তি করে তৈরি।