পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় বড় ধরনের আত্মঘাতী হামলা হয়েছে। ৬ বছর আগে ভারতে পুলওয়ামায় যেভাবে হামলা হয়েছিল, ঠিক একই কায়দায় এই হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি সেনার কনভয়ে ঢুকিয়ে দেয় আত্মঘাতী হামলাকারী।

এতে ১৬ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ১০ জন। এছাড়াও, বিস্ফোরণের কারণে আশপাশের বাড়িগুলোরও ক্ষতি হয়েছে, ফলে মহিলা ও শিশুসহ ১৯ জন নাগরিক আহত হয়েছেন।

২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান ভারতে পুলওয়ামা হামলা চালিয়েছিল। সেদিন বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি নিয়ে ভারতীয় সেনার কনভয়ে ঢুকে পড়েছিল এক আত্মঘাতী হামলাকারী, যাতে ৪০ জন জওয়ান শহীদ হয়েছিলেন। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করেছিল। পরবর্তীতে ভারত বালাকোট স্ট্রাইক করে এই হামলার বদলা নেয়। এখন পাকিস্তান নিজেই নিজেদের তৈরি জালে আটকা পড়ছে। ৬ বছর আগে তারা ভারতে যেভাবে হামলা করেছিল, ঠিক একই কায়দায় এবার তাদের নিজেদের সেনার ওপর হামলা হয়েছে।

টিটিপি-র আসুদ উল হারব দায় স্বীকার করেছে

খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার মীর আলির খাদী মার্কেটে এই হামলা হয়। যেখানে বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি পাকিস্তানি সেনার কনভয়ে ধাক্কা দেয়। জানা যাচ্ছে, যে গাড়িতে বিস্ফোরক ভরা ছিল, সেটি সেনার বোমা নিষ্ক্রিয়করণ স্কোয়াডের গাড়ি ছিল। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে টিটিপি-র আসুদ উল হারব। এটি ইত্তেহাদ উল মুজাহিদিন এবং হাফিজ গুল বাহাদুর গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়।

দু’টি বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে

খাইবার পাখতুনখোয়ার এক পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে এএফপি লিখেছে যে বিস্ফোরণের কারণে দু’টি বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে, এতে ছয় শিশু আহত হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তার মতে, এই বিস্ফোরণ এমন সময়ে হয়েছে যখন খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানের মতো এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। জিও নিউজের একটি রিপোর্টে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তারা টিটিপি-র সঙ্গে যুক্ত ১০ জন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে হত্যা করেছে। এর আগে জঙ্গিরা দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের জান্ডোলা চেকপোস্টের কাছে ফ্রন্টিয়ার কোরের একটি ক্যাম্পে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল।

সন্ত্রাসবাদের কারণে মৃত্যুর ক্ষেত্রে পাকিস্তান দ্বিতীয় স্থানে

গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স ২০২৫ অনুযায়ী, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত মৃত্যুর হার ৪৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০২৩ সালে ৭৪৮ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ১,০৮১ হয়েছে। এর ফলে সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে পাকিস্তান বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এই তালিকায় আফগানিস্তান প্রথম স্থানে রয়েছে।