৪৯৯ টাকার EMI-র ফাঁদ: তরুণ ভারতের নীরব ঋণ সংকট

৪৯৯ টাকার EMI-র ফাঁদ: তরুণ ভারতের নীরব ঋণ সংকট

ভারতের তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে জেনারেশন জেড (১৯৯৫-২০১২ সালে জন্মগ্রহণকারীরা), এক নীরব আর্থিক সংকটে জর্জরিত। যশের মতো অনেক তরুণ, যিনি নয়ডার একটি ফিনটেক স্টার্টআপে মাসে ৪৫,০০০ টাকা আয় করেন, ক্রেডিট কার্ড ও BNPL (এখন কিনুন, পরে পরিশোধ করুন) ঋণের ফাঁদে আটকে গেছেন। একটি ছোট ৫,০০০ টাকার লেনদেন থেকে শুরু হয়ে তার ঋণ এখন ৪.২ লক্ষ টাকায় পৌঁছেছে। ভাড়া, মুদি, ইএমআই ও ক্ষুদ্রঋণ পরিশোধের পর তার হাতে মাত্র ২,০০০ টাকারও কম থাকে। নাস্তা এড়ানো, পরিবারের ফোন এড়িয়ে যাওয়া এখন তার জীবনের অংশ। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, ২০২৪-এ ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া ২.৯২ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা ২০২০-এর তুলনায় দ্বিগুণ। BNPL খেলাপি ঋণের হারও ২.৯%-এ উঠেছে।

শিক্ষা ঋণের বোঝাও কম নয়। ২০২৫-এ ছাত্র ঋণ ১.১৭ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, খেলাপি হার ৮%। গড় ঋণ ৪-১০ লক্ষ টাকা, সুদের হার ৮-১২%। ভোপালের বিটেক স্নাতক স্নেহার মতো তরুণরা মাসে ২৮,০০০ টাকার বেতনে ভাড়া, ঋণ পরিশোধ ও পরিবারের সহায়তা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। যুব বেকারত্ব ৪৩.৩৬%-এ, মুদ্রাস্ফীতি ৮.৩৯%, নগর ভাড়া ১৫-১৮% বেড়েছে। ফিনটেক ঋণের সহজলভ্যতা, আর্থিক সাক্ষরতার অভাব (মাত্র ১৬.৭% কিশোর-কিশোরী আর্থিকভাবে শিক্ষিত), সমবয়সীদের চাপ ও ভোগবাদী সংস্কৃতি এই সংকটকে তীব্র করছে। ৪৮% জেন জেড আর্থিকভাবে অনিরাপদ, ৩০% অর্থকে প্রধান চাপ মনে করেন, যা মানসিক স্বাস্থ্যকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *