ভিটামিন বি12-এর ঘাটতি শরীরকে করে তোলে কঙ্কাল, রাতে শুধু এই ভয়ঙ্কর লক্ষণটি দেখা যায়, এই ৫টি সমাধান এখনই শুরু করুন, জীবন বাঁচবে

ভিটামিন বি12 বাড়ানোর জন্য খাবার: হাত-পায়ে ঝিঁঝি ধরা, মুখে ঘা, আলসার হওয়া বা ক্লান্তি অনুভব করা ভিটামিন-বি12-এর অভাবের সাধারণ লক্ষণ। কিন্তু একটি লক্ষণ আছে, যেদিকে মানুষ খুব কমই মনোযোগ দেয়।
রাতে দেখা দেওয়া এই লক্ষণটি ভিটামিন বি12-এর অভাবের একটি প্রধান লক্ষণ হতে পারে। চলুন জেনে নিই এই লক্ষণটি কী এবং কীভাবে তা দূর করা যায়।
অনেক সময় এমন হয় যে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় কোনো কারণ ছাড়াই শরীর ঘামে ভিজে যায়। ফ্যান চললেও শরীর থেকে ঘাম বের হয়, কাপড় গায়ে চিপকে যায় এবং ঘুম ভেঙে যায়। বেশিরভাগ সময় আমরা এটিকে উপেক্ষা করি, কিন্তু আপনি কি জানেন যে এই লক্ষণটি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির অভাবের ইঙ্গিত হতে পারে? আমরা রাতের যে লক্ষণটির কথা বলছি তা হলো রাতে হঠাৎ করে শরীর থেকে প্রবল ঘাম বের হওয়া। ক্রমাগত ক্লান্তি, ফ্যাকাশে মুখ, খিটখিটে মেজাজ এবং দুর্বলতার পেছনে একটি কারণ থাকতে পারে – শরীরে ভিটামিন বি12-এর অভাব।
ভিটামিন বি12 শরীরের লোহিত রক্তকণিকা, স্নায়ুতন্ত্র এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য। কিন্তু আজকালকার খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং নিরামিষাশী হওয়ার কারণে অনেকের মধ্যে এর অভাব দেখা যায়। বিশেষ করে নিরামিষভোজী লোকেদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। যদি সময়মতো এই অভাব চিহ্নিত করে সঠিক খাদ্য দিয়ে তা পূরণ করা হয়, তাহলে গুরুতর রোগ থেকে বাঁচা যায়। চলুন জেনে নিই ভিটামিন বি12-এর অভাব দূর করতে কোন ৫টি খাবার উপকারী।
ডিমের কুসুম প্রাকৃতিক বি12 সরবরাহকারী
ডিম প্রোটিন এবং বি12-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস। বিশেষ করে ডিমের কুসুম, কারণ এতে বি12 বেশি পরিমাণে থাকে। প্রতিদিন 1 থেকে 2টি ডিম খেলে শরীরের বি12-এর চাহিদা অনেকটাই পূরণ হয়। এটি কেবল শক্তিই বাড়ায় না, বরং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও উন্নত করে। যদিও নিরামিষাশী ব্যক্তিরা ডিম খান না, যারা ডিম খান তাদের জন্য এটি বি12-এর জন্য একটি সহজ বিকল্প।
দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য
দুধ, দই, পনির, ঘোল-এ প্রাকৃতিকভাবে বি12 থাকে। নিরামিষভোজী ব্যক্তিদের জন্য বি12 পেতে এই খাবারগুলি অত্যন্ত সহায়ক। প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ বা এক বাটি দই খেলে শরীরে শক্তি থাকে, হজমশক্তি উন্নত হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা বা বয়স্কদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি।
মাছ – বি12 এর পাশাপাশি ওমেগা-3 এর দুর্দান্ত উৎস
টুনা, স্যামন, সার্ডিন-এর মতো মাছে শুধু প্রচুর বি12 থাকে না, বরং ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিডও থাকে যা হৃদয় এবং মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। সপ্তাহে 2-3 বার মাছ খেলে বি12-এর মাত্রা ভারসাম্যপূর্ণ থাকে। যারা আমিষ খান, তাদের অবশ্যই মাছকে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তবে, ভাজা মাছ এড়িয়ে সেদ্ধ বা ভাজা মাছ খাওয়া উচিত।
চিকেন এবং রেড মিট – প্রোটিনের সাথে বি12-এর বুস্টার ডোজ
যারা আমিষ খান, তাদের জন্য চিকেন, রেড মিট এবং বিশেষ করে লিভার (যকৃত) বি12-এর শক্তিশালী উৎস। এতে পাওয়া প্রোটিন শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং স্নায়ুকে শক্তি দেয়। তবে, মাংসের ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে করা উচিত, কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার ঝুঁকি থাকে।
ফোর্টিফাইড ফুডস – নিরামিষাশীদের জন্য আধুনিক বিকল্প
নিরামিষভোজী লোকেদের জন্য বাজারে আজকাল বি12 সমৃদ্ধ ফোর্টিফাইড ফুডস সহজেই পাওয়া যায়। যেমন – ফোর্টিফাইড দুধ, রুটি, প্রাতঃরাশের সিরিয়াল, সয়াবিন দুধ এবং বাদাম। এই খাবারগুলি বিশেষ করে সেই সমস্ত লোকেদের জন্য যারা মাংস খান না এবং বি12 সাপ্লিমেন্ট নিতে চান না। তবে এই খাবারগুলি কেনার সময় লেবেল পরীক্ষা করা জরুরি, যাতে এতে বি12-এর পরিমাণ নিশ্চিত থাকে।
দ্রষ্টব্য: এই নিবন্ধটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের উদ্দেশ্যে। এটি কোনো চিকিৎসা পরামর্শ, রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার বিকল্প নয়। আরও বিস্তারিত জানার জন্য সর্বদা আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। MT এই নিবন্ধের তথ্যের সঠিকতা, নির্ভরযোগ্যতা বা কার্যকারিতার জন্য দায়ী নয়।