দেশে ‘জিরো-ডোজ’ শিশুদের সংখ্যায় এসেছে বড় হ্রাস, কেন এটি একটি বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে?

জীবনের শুরু থেকেই আপনাকে বিভিন্ন গুরুতর এবং সংক্রামক রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে শৈশবের টিকাকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই দিকে ভারত সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রচেষ্টার ভালো ফল দেখা গেছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে যে সরকারের সক্রিয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির কারণে ‘জিরো-ডোজ চিলড্রেন’-এর হার কমেছে। দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ‘জিরো-ডোজ’ শিশুদের শতাংশ ২০২৩ সালে ০.১১ শতাংশ থেকে কমে ২০২৪ সালে ০.০৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে, যা শিশু স্বাস্থ্যের দিকে একটি উন্নত উদাহরণ স্থাপন করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুসারে, ‘জিরো-ডোজ’ শিশুদের অর্থ হলো সেই সমস্ত শিশুরা, যাদের কাছে নিয়মিত টিকাকরণ পরিষেবা হয় পৌঁছায়নি অথবা যাদের কখনও টিকাকরণই হয়নি। এর মধ্যে ডিপিটি (ডিপথেরিয়া-টিটেনাস-পারটুসিস)-এর প্রথম ডোজ না পাওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য টিকা না পাওয়া পর্যন্ত সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক ‘জিরো-ডোজ’ শিশুদের সংখ্যায় এই হ্রাসের কৃতিত্ব দিয়েছে ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রাম (ইউআইপি)-এর মাধ্যমে টিকাকরণের প্রচারকে। এর অধীনে প্রতি বছর ২.৯ কোটি গর্ভবতী মহিলা এবং ২.৬ কোটি শিশু (০-১ বছর) বিনামূল্যে টিকাকরণ পরিষেবা পেয়ে থাকে।
এই একটি মাত্র পদক্ষেপের সাহায্যে শিশুদের সারা জীবন ধরে বিভিন্ন বিপজ্জনক এবং সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখা যায়।
রোগ প্রতিরোধে টিকাকরণ সবচেয়ে কার্যকর উপায়
স্বাস্থ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে যে টিকাকরণ সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ব্যয়-সাশ্রয়ী উপায়, যার মাধ্যমে আমরা কেবল মানুষকে গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা করতে পারি না, বরং এই রোগগুলির কারণে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের উপর পড়া অতিরিক্ত চাপও কমানো যেতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা, যেমন আশা এবং এএনএম, দেশজুড়ে ১.৩ কোটিরও বেশি টিকাকরণ সেশন পরিচালনা করেন। ধারাবাহিক, নিরন্তর প্রচেষ্টা এবং দেশব্যাপী টিকাকরণ অভিযানের ফলস্বরূপ ‘জিরো-ডোজ’ শিশুদের সংখ্যায় হ্রাস দেখা গেছে।”
বিশ্বব্যাপী তথ্য উদ্বেগজনক
সর্বশেষ (২০২০-২২) রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে মাতৃমৃত্যু হার ২০১৪-১৬ সালে প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ১৩০ থেকে কমে ২০২০-২২ সালে প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ৮৮-তে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, এই রিপোর্ট এমন সময়ে এসেছে যখন সম্প্রতি দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণে বিজ্ঞানীদের একটি দল জানিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ শিশু প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং তাদের মধ্যে গুরুতর ও সংক্রামক রোগের ঝুঁকি আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। এর কারণ হলো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আসামতা এবং ভুল তথ্যের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে টিকাকরণ কভারেজে আসা হ্রাস।