‘দোস্ত দোস্ত না রহা’। পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দিল চিন, ‘এই’ অস্ত্র দিতে অস্বীকার; শাহবাজ সরকার হতাশ

‘দোস্ত দোস্ত না রহা’। পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দিল চিন, ‘এই’ অস্ত্র দিতে অস্বীকার; শাহবাজ সরকার হতাশ

পাকিস্তানকে হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে অস্বীকার চিনের

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা। ভারতের উন্নত হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে চিনের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। তবে, চিন তাদের ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ’-কেও সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সেগুলির উৎপাদন প্রযুক্তি (Transfer of Technology – ToT) পাকিস্তানকে দিতে অস্বীকার করেছে চিন। এই ঘটনা পাকিস্তান সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চিনের স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান: প্রযুক্তি ‘রপ্তানিযোগ্য’ নয়

চিনের সরকারি সূত্র অনুযায়ী, হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র এখনও রপ্তানির জন্য প্রস্তুত নয়। এমনকি, এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের কোনো ‘রপ্তানি সংস্করণ’ও চিন তৈরি করেনি। এর ফলে নিকট ভবিষ্যতে পাকিস্তানের এই উন্নত প্রযুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এর আগে চিন পাকিস্তানকে JF-17 যুদ্ধবিমান, HQ-9 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছিল। কিন্তু হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রযুক্তি হওয়ায় চিন এর উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখার নীতি গ্রহণ করেছে।

ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিযোগিতা কি আসাম?

গত কয়েক বছরে ভারত দেশীয় হাইপারসোনিক সিস্টেম (যেমন DRDO-র HSTDV প্রকল্প) তৈরি করার ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এর ফলে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান চিনের কাছে সাহায্য চেয়েছিল যাতে তারা হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র পেতে পারে এবং নিজেদের দেশে সেগুলি তৈরি করতে পারে। তবে, চিনের প্রত্যাখ্যানের পর ভারতের উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির সঙ্গে পাকিস্তানের পাল্লা দেওয়া কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে পাকিস্তানের কৌশলগত আকাঙ্ক্ষায় বড় ধাক্কা লেগেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

চিনের প্রত্যাখ্যানের কারণ

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের প্রত্যাখ্যানের পেছনে দুটি প্রধান কারণ রয়েছে:

১. পাকিস্তানে ইতিমধ্যে সরবরাহ করা অস্ত্রের সীমিত ব্যবহার – চিনের দেওয়া অনেক অস্ত্র ব্যবস্থা বাস্তবে প্রত্যাশিত কার্যকারিতা দেখাতে পারেনি।

২. প্রযুক্তি পাচারের ভয় – চিনের আশঙ্কা যে পাকিস্তান এই প্রযুক্তি সরাসরি বা পরোক্ষভাবে পশ্চিমা দেশগুলির কাছে পৌঁছে দিতে পারে। তাই প্রযুক্তিগত সুরক্ষার কথা ভেবে চিন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক চাপ এবং রাজনৈতিক সমীকরণ

হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র আন্তর্জাতিক কৌশলগত ভারসাম্য নষ্ট করতে সক্ষম একটি ব্যবস্থা হওয়ায় চিন এর বিতরণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত সীমিত রাখছে। এছাড়াও, আমেরিকার মতো শক্তিশালী দেশের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার আবহে চিন এই প্রযুক্তি অন্য দেশের কাছে পাঠাতে অত্যন্ত সতর্ক। তবে, চিন বর্তমানে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে আরও উন্নত করতে এবং বিপুল পরিমাণে উৎপাদন করতে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা অন্য দেশে প্রযুক্তি হস্তান্তরের কথা ভাবছে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *