আমেরিকায় আইফোন তৈরি করুন!’ অ্যাপলকে ট্রাম্পের নতুন হুমকি, কিন্তু ভারতের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আসাম্ভব

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তি সংস্থা অ্যাপলকে সতর্ক করে বলেছেন যে, যদি তাদের মোবাইল ফোন আমেরিকায় তৈরি না হয়, তাহলে সেগুলোর উপর ভারী কর (ট্যাক্স) আরোপ করা হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি চান আমেরিকায় বিক্রি হওয়া মোবাইল ফোনগুলো যেন ভারতের মতো অন্য কোনো দেশে নয়, বরং আমেরিকার মাটিতেই তৈরি হয়। তিনি হুমকি দিয়েছেন যে, যদি এমনটা না হয়, তাহলে তিনি আমেরিকার বাইরে তৈরি হওয়া সমস্ত মোবাইল ফোনের উপর, যার মধ্যে অ্যাপলের ফোনও রয়েছে, ২৫ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক বসানোর কথা বিবেচনা করবেন।
তবে, ভারতের জন্য এই হুমকি খুব একটা কার্যকর হবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ ভারত মোবাইল ফোন উৎপাদনে বিশাল বিনিয়োগ করেছে এবং কর্মসংস্থান দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। কর্ণাটক রাজ্যের দেবনাহল্লি এলাকায় অ্যাপলের সরবরাহকারী সংস্থা ফক্সকন (Foxconn) ৩০০ একর জমিতে প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এই কারখানায় বর্তমানে ৮,০০০ জন কাজ করছেন এবং বছরের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা ৪০,০০০-এ পৌঁছাতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ভারত বিশ্বের মোট মোবাইল ফোন উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশে পরিণত হতে চলেছে। ভারতের ক্রমবর্ধমান শ্রমশক্তি, কারিগরি শিক্ষা প্রাপ্ত যুবকদের প্রাচুর্য এবং স্থানীয় অর্থনীতির জোরালো বৃদ্ধি ট্রাম্পের এই হুমকির সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
ট্রাম্পের আইফোন হুঁশিয়ারি: ভারতকে টলানো আসাম্ভব, বলছে শিল্পমহল
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিশ্বের বৃহত্তম প্রযুক্তি কো ম্পা নিগুলোর মধ্যে অন্যতম অ্যাপলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি তাদের মোবাইল ফোন আমেরিকায় তৈরি না হয়, তাহলে সেগুলোর উপর ভারী কর চাপানো হবে।
ট্রাম্পের দাবি, তিনি চান আমেরিকায় বিক্রি হওয়া মোবাইল ফোনগুলো যেন আমেরিকাতেই তৈরি হয়, ভারত বা অন্য কোনো দেশে নয়। তিনি বলেছেন, যদি এমনটা না হয়, তাহলে তিনি আমেরিকার বাইরে তৈরি হওয়া সমস্ত মোবাইল ফোন, যার মধ্যে অ্যাপলের ফোনও রয়েছে, তার উপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক বসানোর কথা ভাবছেন।
ভারতে বিশাল বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের বিস্তার
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের দেবনাহল্লি এলাকায় অ্যাপলের সরবরাহকারী সংস্থা ফক্সকন (Foxconn) ৩০০ একর জমিতে প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এই কারখানাটি বর্তমানে ৮,০০০ মানুষের কর্মসংস্থান জুগিয়েছে এবং বছরের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা ৪০,০০০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ভারত বিশ্বের মোট মোবাইল ফোন উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশে পরিণত হতে চলেছে।
বদলে যাওয়া স্থানীয় ছবি এবং নতুন শিল্প শক্তি
ভারতে মোবাইল উৎপাদন কেবল কর্মসংস্থানই বাড়ায়নি, বরং স্থানীয় অর্থনীতিতেও গতি এনেছে। ফক্সকনের কারখানার আশেপাশে মজুরি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে, ইন্দো-মিম (Indo-MIM) এবং সেন্ট্রাম (Centum)-এর মতো অনেক স্থানীয় সংস্থা মোবাইল উৎপাদন শৃঙ্খলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি ভারতে একটি শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভর শিল্প ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।
ভারতের শ্রমশক্তির অফুরন্ত যোগান, আমেরিকায় যা নেই
ভারতে কারিগরি শিক্ষা প্রাপ্ত যুবকদের কোনো অভাব নেই। প্রতি বছর হাজার হাজার তরুণ-তরুণী কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে এসে উৎপাদন খাতে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকে। শুধু কর্ণাটক রাজ্যের জনসংখ্যাই ভিয়েতনাম দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক, যা থেকে ভারতের শ্রমশক্তির বিশালতা অনুমান করা যায়।
জোশ ফলগার (Josh Folger) নামে একজন শিল্প বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন যে, তিনি প্রতি বছর প্রায় ৭০০টি আবেদন পান, যা প্রমাণ করে যে ভারতে দক্ষ মানুষের কোনো অভাব নেই।
আমেরিকার সমস্যা: উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত নয় নতুন প্রজন্ম
যেখানে ভারতে তরুণ প্রকৌশলীরা বিপুল সংখ্যায় রয়েছেন এবং তারা কঠিন পরিস্থিতিতেও কাজ করতে প্রস্তুত, সেখানে আমেরিকায় এমন পরিস্থিতি নেই। সেখানে পুরোনো শিল্প শহরগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রশিক্ষিত তরুণ নেই, না তারা এই খাতের প্রতি আকৃষ্ট। এই কারণেই ট্রাম্পের স্বপ্ন যে মোবাইল উৎপাদন আবার আমেরিকায় শুরু হোক, তা দূরহ বলে মনে হচ্ছে।