ভারতের সেই ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র, যার পদধ্বনি চীন-পাকের ঘুম কেড়েছে! পরমাণু ডুবোজাহাজ থেকে হবে পরীক্ষা

ভারতের সেই ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র, যার পদধ্বনি চীন-পাকের ঘুম কেড়েছে! পরমাণু ডুবোজাহাজ থেকে হবে পরীক্ষা

চীন এবং পাকিস্তানের মোকাবিলায় ভারত নিরন্তর নিজেদের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত এবার কে-৬ হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরমাণু সাবমেরিন থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারতের কে-৬ হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের সমুদ্র পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে।

কে-৬ ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এটিকে ভারতের এস-৫ পরমাণু ডুবোজাহাজে মোতায়েন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এটি একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (Intercontinental Ballistic Missile)। এর গতি এবং পাল্লা ব্রহ্মোস-এর চেয়েও অনেক বেশি হবে। ভারত বিগত বহু বছর ধরে তার ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পে খুব দ্রুত গতিতে কাজ করছে। আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা বলতে গেলে, ভারতের কাছে বিভিন্ন শ্রেণীর ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। তবে কে-৬ ব্রহ্মোস-এর থেকেও বেশি গতি এবং পাল্লা সম্পন্ন হবে। এখন তার সমুদ্র পরীক্ষার প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। অর্থাৎ, এটিকে বিভিন্ন মাপকাঠিতে বিচার করা হবে।

কে-৬ কে পূর্ববর্তী সিস্টেমগুলি থেকে কী আলাদা করে?
কে-৬ এর বৈশিষ্ট্যগুলি এটিকে অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র থেকে আলাদা করে তুলেছে:

হাইপারসোনিক গতি: এটি ম্যাক ৭.৫ গতিতে ছুটতে সক্ষম, যা প্রায় ৯,২৬১ কিলোমিটার/ঘণ্টা। এই গতি বেশিরভাগ পরিচিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে।

MIRV ক্ষমতা: এটিকে মাল্টিপল ইনডিপেন্ডেন্টলি টার্গেটেবল রিএন্ট্রি ভেহিকেলস (MIRV) বহন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যার ফলে একটি ক্ষেপণাস্ত্র একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে পারে। MIRV-এর এই ক্ষমতা কে-৬ কে ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণ এবং কৌশলগত প্রতিরোধের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার করে তোলে।

৮,০০০ কিলোমিটার পাল্লা: ৮,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত কার্যকরী পাল্লা সহ, কে-৬ উচ্চ-মূল্যের কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলি সহ বিশাল অঞ্চলকে তার আওতায় রাখে।

সামরিক গুরুত্ব: সামরিক বিশেষজ্ঞরা এটিকে একটি বল গুণক (Force Multiplier) হিসাবে দেখছেন, বিশেষত ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে (IOR) ক্রমবর্ধমান চীনা নৌবাহিনীর সক্রিয়তাকে মাথায় রেখে।

পেলোড নমনীয়তা: পরমাণু পেলোড ছাড়াও, ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রচলিত ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম বলে জানা গেছে, যা যুদ্ধের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কার্যকরী নমনীয়তা প্রদান করে।

SLBM পরিবারের অংশ হবে
কে-৬ ভারতের ক্রমবর্ধমান SLBM (Submarine Launched Ballistic Missile) পরিবারের অংশ হবে, যার মধ্যে কে-৪ এবং কে-৫ অন্তর্ভুক্ত, উভয়ই ইতিমধ্যেই পরিষেবাতে যুক্ত হয়েছে। তবে, এর পূর্বসূরিদের বিপরীতে, কে-৬ এর হাইপারসোনিক এবং MIRV ক্ষমতা এটিকে একটি নতুন কৌশলগত স্তরে নিয়ে যায়, যা ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স এবং ইউনাইটেড কিংডমের মতো অভিজাত বিশ্ব সামরিক শক্তিগুলির সাথে যুক্ত করে।

এর প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বাইরে, কে-৬ একটি স্পষ্ট বার্তার প্রতিনিধিত্ব করে: ভারত কেবল তার পরমাণু ত্রিভুজকে শক্তিশালী করছে না, বরং ইন্দো-প্যাসিফিকে উদ্ভূত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মধ্যে জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় একটি সক্রিয় অবস্থানও গ্রহণ করছে। যেহেতু সমুদ্র পরীক্ষাগুলি কাছাকাছি আসছে, প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন; কে-৬ কেবল আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র নয়। এটি এমন একটি সুপার অস্ত্র যা তৈরি হচ্ছে, যা সমুদ্রের নিচে ক্ষমতার ভারসাম্যকে নতুন আকার দিতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *