কিস্তি ১: চীন-রাশিয়া দ্বন্দ্বে নতুন মোড়? তেহরানের প্রতিরক্ষা নীতিতে কি বদল আসছে?

কিস্তি ১: চীন-রাশিয়া দ্বন্দ্বে নতুন মোড়? তেহরানের প্রতিরক্ষা নীতিতে কি বদল আসছে?

ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের সময় রাশিয়া প্রকাশ্যে ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছিল, এমনকি ইসরায়েলি হামলা এবং পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার তীব্র নিন্দা করেছিল। কিন্তু সেই রাশিয়াকেই এবার চীন-এর জন্য ইরান ধোঁকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে মনে হচ্ছে।

ইরানি যুদ্ধবিমান চুক্তি: Su-35 নাকি J-10C?
ইরান প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার কাছ থেকে ৪.৫ প্রজন্মের Su-35 ফাইটার জেট কেনার চুক্তি করেছিল। কিন্তু এখন তারা চীনের ৪.৫ প্রজন্মের J-10C কেনার পরিকল্পনা করছে, যে একই ফাইটার জেট বর্তমানে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কাছেও রয়েছে।

ইরানের এই মুহূর্তে উন্নত যুদ্ধবিমানের (ফাইটার জেট) খুব প্রয়োজন। সম্প্রতি তারা ইসরায়েলি হামলার মুখে পড়েছিল, যেখানে ইসরায়েল F-16 এবং F-35-এর মতো অত্যাধুনিক ফাইটার জেট ব্যবহার করেছিল। অন্যদিকে, ইরানের বিমান বাহিনী এখনও F-4 Phantom এবং MiG-29-এর মতো পুরোনো যুদ্ধবিমানের ওপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে অনেকগুলো ৫০ বছরেরও বেশি পুরোনো। এই কারণেই ইরান যত দ্রুত সম্ভব ৪.৫ প্রজন্মের ফাইটার জেট পেতে চাইছে।

কেন Su-35 এর বদলে J-10C কিনতে চাইছে ইরান?
ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া ওয়েবসাইটের মতে, যদিও ইরান রাশিয়ান Su-35 কিনতেই চেয়েছিল এবং এর জন্য চুক্তিও করেছিল, কিন্তু এর সরবরাহে বিলম্বের কারণে এখন ইরানের নজর চীনের J-10C-এর দিকে। ইরানের সামরিক কর্মকর্তাদের ধারণা, ইসরায়েল যেকোনো সময় ইরানের ওপর হামলা করতে পারে, তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের কাছে উন্নত ফাইটার জেট থাকা উচিত।

J-10C এবং Su-35 এর মধ্যে কোনটি বেশি ভালো?
চীনা J-10C এবং রাশিয়ান Su-35 দুটিই আধুনিক ফাইটার জেট, তবে J-10C একটি মাঝারি ওজনের, সিঙ্গেল-ইঞ্জিন জেট, যেখানে Su-35 একটি ভারী এবং দুটি ইঞ্জিনযুক্ত বিমান। যদি রাডারের কথা বলি, তাহলে J-10C-তে AESA রাডার রয়েছে, যা Su-35-এর রাডার থেকে উন্নততর। যেখানে J-10C-তে PL-10 এবং PL-15 ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, সেখানে Su-35-এ রাশিয়ার শক্তিশালী R-74 এবং R-77-1 ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করা আছে। এছাড়াও, Su-35-এর সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এর পেলোড ক্ষমতা এবং ইঞ্জিন শক্তি J-10C থেকে অনেক বেশি উন্নত।

J-10C এর তুলনা করা হয় মার্কিন F-16 এর সাথে
J-10C-কে চীনের PLA ২০০৬ সালে তাদের বিমানবহরে যুক্ত করেছিল। ২০২৫ সাল পর্যন্ত চীনের কাছে প্রায় ২২০টি J-10C ফাইটার জেট রয়েছে। এই ফাইটার জেটের তুলনা প্রায়শই আমেরিকার F-16 ফাইটার জেটের সাথে করা হয়। যদি ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে J-10C-এর চুক্তি করে, তবে এটি প্রতিরক্ষা বাজারের জন্য একটি বড় পরিবর্তন হবে এবং এটি রাশিয়ার জন্য একটি বড় ধাক্কা প্রমাণিত হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *