মোসাদের গুপ্তচর, ইরানে পা রাখলে ফাঁসি! খামেনি-এর মুখপত্রের IAEA প্রধানকে হুমকি

মোসাদের গুপ্তচর, ইরানে পা রাখলে ফাঁসি! খামেনি-এর মুখপত্রের IAEA প্রধানকে হুমকি

ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধবিরতির ছয় দিন পরেও উত্তেজনা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই-এর মুখপত্র বলে বিবেচিত কট্টরপন্থী সংবাদপত্র কাইহান (Kayhan) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসিকে “মোসাদের গুপ্তচর” আখ্যা দিয়ে প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছে যে, যদি তিনি ইরানের মাটিতে পা রাখেন তবে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত।

আসলে, গ্রোসি সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শনের অনুমতি চেয়েছিলেন, যা তেহরান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে যে তিনি “বিদ্বেষপূর্ণ উদ্দেশ্য” নিয়ে কাজ করছেন। ইরানের সংসদও IAEA-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। তেহরানের অভিযোগ, ১২ জুন IAEA-এর সমালোচনামূলক প্রতিবেদনই ইজরায়েল কর্তৃক ১৩ জুন শুরু হওয়া হামলার অজুহাত তৈরি করেছিল।

গ্রোসির মন্তব্য নিয়েও তোলপাড়
IAEA প্রধান গ্রোসি আরও বলেছেন যে, ইরান শীঘ্রই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে চলেছে, যদি এটি হয় তবে তারা সহজেই যেকোনো সময় পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারবে। গ্রোসি মার্কিন হামলার আগে ইরান কর্তৃক তাদের পারমাণবিক স্থাপনা থেকে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম লুকিয়ে রাখার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেন যে এটি সম্ভব। গ্রোসির ইরান সম্পর্কিত ধারাবাহিক মন্তব্যের কারণে ইরানে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এবং গ্রোসিকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে।

সংবাদপত্রটি কী লিখেছে?
সংবাদপত্রটি সম্পাদকীয়তে লিখেছে, “এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা উচিত যে, যদি গ্রোসি ইরানে আসেন তবে আমাদের জনগণের হত্যায় অংশীদারিত্ব এবং মোসাদের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তার বিচার করে ফাঁসি দেওয়া হবে।”

ইজরায়েলকে হুঁশিয়ারি
ইরান রবিবার ইজরায়েলের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছে যে, যুদ্ধবিরতি পালনের কোনো আশা তাদের নেই। ইরানি সেনাবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ আবদুল রহিম মুসাভি বলেছেন, “আমরা যুদ্ধ শুরু করিনি, কিন্তু আমাদের উপর হামলা হলে আমরা পূর্ণ শক্তি দিয়ে জবাব দিয়েছি। শত্রুর প্রতিশ্রুতিতে আমাদের কোনো বিশ্বাস নেই।”

আমেরিকা-ইজরায়েলের হামলায় বিগড়েছে সমীকরণ
উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইজরায়েল ইরানে বেশ কয়েকটি বাঙ্কার-ভেদী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল, যার ফলে অনেক শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছিলেন। জবাবে ইরান ইজরায়েলের শহরগুলিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। আমেরিকাও ইজরায়েলের সাথে মিলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছিল। এই সংঘাতের ফলে আমেরিকা-ইরান পারমাণবিক আলোচনা আবারও থমকে গেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *