৮,০০০ কিমি পাল্লার K-6 সাবমেরিন ক্ষেপণাস্ত্র চিনের কোণায় কোণায় আঘাত হানবে, ভয়ে পালাবে শত্রু!

ভারত K-6 ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্রটি সবচেয়ে শক্তিশালী সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে। এর পাল্লার মধ্যে চীন, পাকিস্তান সহ বিশ্বের একটি বড় অংশ আসবে। হায়দ্রাবাদে অবস্থিত DRDO-এর অ্যাডভান্সড নেভাল সিস্টেমস ল্যাবরেটরি এই প্রকল্পে কাজ করছে। প্রতিরক্ষা সূত্র অনুযায়ী, এই প্রকল্পটি ২০১৭ সালে শুরু হয়েছিল এবং এখন এটি যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
K-6 ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে বিশেষ বিষয় হল এর গতি প্রায় ৭.৫ ম্যাক, অর্থাৎ শব্দের গতির চেয়ে ৭.৫ গুণ বেশি। এর মারক ক্ষমতা প্রায় ৮০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হবে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যস্থলে প্রায় ৯২৬১ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে পৌঁছাবে। এছাড়াও, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রচলিত এবং পারমাণবিক উভয় ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম।
K-6 ক্ষেপণাস্ত্র শত্রুদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দেবে, ভারতের শক্তি তিনগুণ বাড়বে
K-6 ক্ষেপণাস্ত্রকে সাবমেরিন থেকে নিরাপদ দূরত্বে উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে। এর হাইপারসোনিক গতি এটিকে শত্রুদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে নির্ভুল লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম করে তোলে। প্রতিরক্ষা সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতের অরিহন্ত শ্রেণীর সাবমেরিনগুলি এত বড় ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে না। তাই এখন S-5 নামে নতুন সাবমেরিন তৈরি হচ্ছে। এই সাবমেরিনগুলিতে একবারে ১৬টি K-6 ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে। অরিহন্ত সাবমেরিনের তুলনায় S-5 সাবমেরিনগুলি ১৯০ মেগাওয়াট শক্তি দ্বারা চালিত হবে এবং এর ডিসপ্লেসমেন্ট প্রায় ১৩,০০০ টন হবে।
এটি ভারতের নৌ পারমাণবিক শক্তিকে শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি তিন ধাপের কঠিন জ্বালানি ক্ষেপণাস্ত্র, যার দৈর্ঘ্য ১২ মিটার এবং ব্যাস ২ মিটার। এটি ৩০০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত পেলোড বহন করতে সক্ষম হবে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলি টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভেহিকেল (MIRV) প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত হবে। এর সাহায্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র থেকেই একাধিক ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্যবস্তুকে একই সাথে আঘাত করা যাবে। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের পর ভারত এই প্রযুক্তি তৈরি করা ষষ্ঠ দেশ হবে। S-5 সাবমেরিনের নির্মাণ কাজ ২০২৭ সালে শুরু হবে। K-6 ক্ষেপণাস্ত্রের মারক ক্ষমতা প্রায় ৯০ থেকে ১০০ মিটার নির্ভুলতার সাথে লক্ষ্যভেদ করবে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের বর্তমান K-4 (৩৫০০ কিলোমিটার পাল্লা) এবং K-5 (৫০০০-৬০০০ কিলোমিটার পাল্লা) ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে বেশি উন্নত এবং বিপজ্জনক হবে। K-6 ক্ষেপণাস্ত্রের অন্তর্ভুক্তির ফলে ভারতের শক্তি তিনগুণ বেড়ে যাবে, কারণ এর মাধ্যমে ভারত স্থল, জল এবং বায়ু – এই তিনটি মাধ্যমেই পারমাণবিক হামলা চালাতে সক্ষম হবে। চীনের ক্রমবর্ধমান হুমকি বিবেচনা করে, এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে।