একবার হলেই নিশ্চিত মৃত্যু এই ঘাতক রোগের বাঁচার সম্ভাবনা ০% জেনে নিন লক্ষণ!

একবার ভাবুন, আপনি সম্পূর্ণ সুস্থ জীবনযাপন করছেন, প্রতিদিনের কাজ করছেন, কিন্তু হঠাৎ করে আপনার শরীরে এমন একটি ভাইরাস প্রবেশ করল যা কয়েক দিনের মধ্যেই আপনাকে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিল! শুনতে ভীতিকর লাগছে, তাই না? তবে এটি কোনো চলচ্চিত্রের গল্প নয়, বরং এক ভয়াবহ বাস্তবতা। আমরা সেই ‘নীরব ঘাতক’-এর কথা বলছি, যা একবার শরীরে প্রবেশ করলে এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় কেউই বাঁচতে পারেনি। চিকিৎসা জগতেও এর নাম শুনলে শিউরে ওঠে মানুষ, কারণ এর থেকে বেঁচে ফেরার হার শূন্য (০%)। আমরা যে রোগটির কথা বলছি, সেটি হলো র্যাবিস (Rabies)।
এটি এমন একটি সংক্রমণ যা প্রাথমিকভাবে সাধারণ মনে হতে পারে, কিন্তু এর পরিণতি এতটাই ভয়াবহ যে বিজ্ঞানী এবং ডাক্তাররা আজ পর্যন্ত এর কোনো নিরাময় খুঁজে পাননি। র্যাবিস একটি ভাইরাল রোগ যা কুকুর, বিড়াল, বাঁদর, বাদুড়ের মতো প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। যদি কোনো সংক্রমিত প্রাণী কামড়ায় এবং সময় মতো ভ্যাকসিন না নেওয়া হয়, তাহলে ভাইরাস মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র আক্রমণ করে। একবার লক্ষণ শুরু হয়ে গেলে, বাঁচার হার ০% হয়। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন— শূন্য শতাংশ।
কীভাবে ছড়ায় র্যাবিস?
র্যাবিস ভাইরাস প্রাণীর লালা থেকে ছড়ায়। সংক্রমিত প্রাণীর কামড়, আঁচড় অথবা এমনকি তার লালা যদি খোলা ক্ষত বা চোখ-মুখের মতো শ্লেষ্মা ঝিল্লির সংস্পর্শে আসে, তাহলেও সংক্রমণ হতে পারে। ভারতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কুকুরের কামড় থেকে এই রোগ ছড়ায়।
র্যাবিসের লক্ষণ (Rabies Symptoms)
র্যাবিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলো ফ্লুর মতো মনে হতে পারে, কিন্তু ২-৩ দিনের মধ্যেই এটি প্রাণঘাতী রূপ নেয়:
জ্বর এবং মাথাব্যথা
অস্থিরতা এবং উদ্বেগ
গলায় খিঁচুনি, গিলতে অসুবিধা
বাতাস বা জল দেখলে ভয় লাগা (Hydrophobia)
অতিরিক্ত লালা নিঃসরণ
মানসিক বিভ্রান্তি এবং রাগ
পক্ষাঘাত এবং শেষ পর্যন্ত কোমা ও মৃত্যু
প্রতিরোধের উপায়
র্যাবিস থেকে বাঁচা শুধুমাত্র তখনই সম্ভব যখন কামড়ানোর পরপরই ভ্যাকসিন নেওয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে, সংক্রমিত প্রাণীর কামড়ানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এরপর মোট ৪-৫টি ডোজ দেওয়া হয়, যা সংক্রমণকে প্রতিরোধ করতে পারে।