ইরান পেল নতুন পরাশক্তির সমর্থন, ইসরায়েলের উপর কি এবার গর্জন করবে চিনা যুদ্ধবিমান?

ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রায় ভাঙার মুখে। গত তিন দিন ধরে ইরানের উপর লাগাতার হামলা চলছে। যদিও ইসরায়েল এই হামলার কথা অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে, এটিও নিশ্চিত যে, এবার যদি যুদ্ধবিরতি ভাঙে, তবে পরিস্থিতি আগের চেয়েও খারাপ হবে।
ইসরায়েলের পাশে সরাসরি আমেরিকা দাঁড়িয়েছে, আর ইরানও রাশিয়া নয়, বরং এক নতুন পরাশক্তি চীনের সমর্থন পেয়েছে। দ্রুতই চীন ইরানকে নতুন যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে চলেছে, যা ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর মোকাবিলা করবে।
চীন এবং ইরানের মধ্যে দ্রুতই যুদ্ধবিমান চুক্তি সম্পন্ন হতে চলেছে। এই প্রথমবার চীন সরাসরি ইরানকে ৪.৫ জেনারেশনের J-10 যুদ্ধবিমান দেবে। বিশেষ বিষয় হলো, দুই দেশের মধ্যে এই যুদ্ধবিমান চুক্তিটি প্রায় ১০ বছর আগে ২০১৫ সালে শুরু হয়েছিল, কিন্তু সে সময় দুটি কারণে এই চুক্তি সম্পন্ন হতে পারেনি। এরপর ইরান রাশিয়ার সাথে ১৫০টি Su-35 যুদ্ধবিমানের চুক্তি করেছিল, কিন্তু রাশিয়া ইরানকে মাত্র ৪টি জেট সরবরাহ করতে পেরেছিল। এরপর সেই চুক্তিও বাতিল হয়ে যায়।
কী কারণে চুক্তি আটকে গিয়েছিল?
চীন ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিমানের চুক্তি ২০১৫ সাল থেকে আটকে ছিল। আসলে, সেই বছর ইরান J-10 সিরিজের জেটের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল। ইরান ১৫০টি J-10 সিরিজের জেট কিনতে চেয়েছিল, কিন্তু অর্থ পরিশোধের বিষয় নিয়ে চীন-ইরানের মধ্যে সমঝোতা হয়নি। চীন মার্কিন ডলারে চুক্তির অর্থ পরিশোধ করতে চেয়েছিল, আর ইরান তেল ও গ্যাস দিয়ে চুক্তির মূল্য পরিশোধের প্রস্তাব দিয়েছিল। ইরানের উপর কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের নগদ অর্থের অভাব ছিল।
বারুদ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান
ইরান এখন ইসরায়েলের সাথে একটি বড় যুদ্ধের জন্য সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইরান ইসরায়েল ও আমেরিকার কাছে তাদের ক্ষতির ক্ষতিপূরণও দাবি করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জাতিসংঘে তাদের ক্ষতির তালিকা জমা দিয়েছেন। ইরান বলেছে যে, ক্ষতির ক্ষতিপূরণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল দায়ী। জাতিসংঘ যেন ইরানের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করে। বড় যুদ্ধের প্রস্তুতির পাশাপাশি ইরান একই সাথে কূটনীতি এবং জিহাদনীতি শুরু করেছে। আরব বিশ্বে ইসরায়েল এবং আমেরিকাকে ঘিরে ফেলার জন্য ইরান ধর্মের আশ্রয় নিয়েছে।
প্রক্সি যুদ্ধেরও প্রস্তুতি
ইরান আমেরিকা এবং ইসরায়েলকে এক সাথে জবাব দেওয়ার জন্য প্রক্সি যুদ্ধের প্রস্তুতিও শুরু করেছে। অর্থাৎ, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র এবং শিয়া প্রক্সি গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েল ও আমেরিকার বিরুদ্ধে একসাথে যুদ্ধ শুরু করতে পারে। প্রক্সি গোষ্ঠীগুলো আরব বিশ্বে আমেরিকার বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাতে পারে। এছাড়াও, ইরাক থেকে ইসরায়েলের উপর হামলা শুরু হতে পারে। ইরাকের প্রক্সি ব্যবহার করে ইসরায়েলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো যেতে পারে।
নেতানিয়াহু যাচ্ছেন আমেরিকা সফরে
ইরান আসন্ন বড় যুদ্ধের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে। অন্যদিকে, ৭ই জুলাই থেকে নেতানিয়াহু আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন। এই সফরে যুদ্ধের পরবর্তী ধাপের কৌশল নির্ধারণ করা হবে। যদিও ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন যে তিনি ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনতে এবং চুক্তি করতে সফল হবেন।