‘যদি এটা ধর্ষণ হয়, তাহলে অভিযুক্তের গলায় লাভ বাইটের চিহ্ন কেন?’ কলকাতা গণধর্ষণ মামলায় আইনজীবীর চাঞ্চল্যকর দাবি

কলকাতার একটি আইন কলেজে ২৪ বছর বয়সী এক ছাত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া গণধর্ষণের অভিযোগের ঘটনাটি সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এই মামলার মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের আইনজীবী রাজু গাঙ্গুলি এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন।
তিনি বলেছেন যে, মেডিকো-লিগ্যাল রিপোর্টে অভিযুক্তের শরীরে আঁচড়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে, কিন্তু তার গলায় ‘লাভ বাইট’-এর চিহ্নও পাওয়া গেছে। আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছেন যে, যদি এটি ধর্ষণই হয়ে থাকে, তাহলে এই চিহ্নগুলো কোথা থেকে এল? এই দাবি শুনে আদালতে উপস্থিত সকলে হতবাক হয়ে যান।
আইনজীবীর চাঞ্চল্যকর দাবি ও মামলার পরিস্থিতি
ঘটনাটি ২০২৫ সালের ২৫শে জুন কলেজ ক্যাম্পাসের গার্ডরুমে ঘটে, যেখানে অভিযোগ অনুযায়ী ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। পুলিশ মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র-সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। মনোজিৎ মিশ্র একজন প্রাক্তন ছাত্র এবং অনুশীলনকারী আইনজীবী। অন্য দুই অভিযুক্ত হলেন জৈব আহমেদ এবং প্রমিত মুখার্জি, যারা কলেজের সিনিয়র ছাত্র, এবং চতুর্থ অভিযুক্ত একজন নিরাপত্তা রক্ষী। নির্যাতিতার মেডিকেল রিপোর্টে তার শরীরে আঁচড় এবং কামড়ের চিহ্নের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আইনজীবীর দাবি হলো, লাভ বাইটের চিহ্ন ঘটনাটিকে সন্দেহজনক করে তোলে, কিন্তু সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল এই দাবি খারিজ করে বলেছেন যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী গণধর্ষণে সকল সহযোগী দোষী বলে বিবেচিত হয়, যদিও তারা সরাসরি অপরাধে যুক্ত না থাকে। পুলিশ জানিয়েছে যে, অভিযুক্তরা নির্যাতিতাকে ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়েছিল। তাদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে একটি রাজনৈতিক বিতর্কের কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজেপি অভিযোগ করেছে যে মনোজিৎ তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত, যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত দ্রুত করেছে। এই ঘটনা কলেজে নিরাপত্তা এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে।